পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘কোথায় আছে রানু তাহলে ? ‘ঐ তো ভূষির কথা বললাম ' সুমনা একটু ক্ষেপে উঠে যেন বললে, “তোর এত বড় বড় ! তুই কি হয়েছিস কী? যা তুই বেরিয়ে যা । তোর মুখ দেখতে ভাল লাগে না আমার। বেরিয়ে যা তুই । বেরিয়ে যা । বেরো অামার বাড়ির থেকে । জোচ্চোর বেল্লিক শয়তান কোথণকণর 1’ মুখে রক্ত উঠবার উপক্রম হল সুমনার। কিন্তু মাকে শান্ত ঠাণ্ড করবার কোনো লক্ষণই দেখা গেল না হারীতের দিক থেকে । সে বিছানার থেকে সরে দাড়াল—দরজা খুলে বেরিয়েই গেল—অন্ধকারের ভিতর—যে-পথ দিয়ে এসেছিল সেই পথে । সারা রণত এক কণতরীতে-কাতরাতে শেষ রণতে বাস্তবিকই যেন দিঘির ঠাণ্ডা মাংসের মত জলের উপর দিয়ে ফিনফিনে হাত-পায়ের একটা মাকড়ের মত চলে গেল, মিশে গেল, বন-জঙ্গলের অন্ধকারের কবেকার কী সে, পৃথিবীর অখণ্ড মাকড়ের জালের মত সুমন । * . শেষ রণতে জল খেতে উঠে অৰ্চনা দেখল যে জলের কলসি ঘরে নেই ; রান্নাঘর ঘুরে এল । কোথাও নেই কলসি । তবে কি চোর ঢুকেছিল ঘরে ? শুধু কি কলসির জল খাবার জন্যই ঢুকেছিল, তাই নিয়ে পালিয়ে গেছে ? সুমনার ঘরের দিকে গেল অৰ্চনা, আজ বিকেলে নিশীথ চলে যাওঁয়ার পর সুমনার ঘরে অনেকক্ষণ ছিল সে ; প্রায় রাত এগারটা আদি ছিল । তারপরে মহিম তাকে ডেকে নিয়ে গেছে । কথা ছিল মহিমের সঙ্গে প্রথম রাতটা অৰ্চনা নিজের ঘরে ঘুমিয়ে নিয়ে, রাত একট-দেড়টার সময়ে সুমনার কাছে ফিরে আসবে। একা মানুষ, রোগী মানুষ সুমনা, তার কাছে লোক থাকা চাই। নিশীথও বলে দিয়ে গেছে, সুমনা যেন রাতে একা না থাকে অৰ্চনা, তুমি থেকে, যদি মহিম তোমাকে মাঝে-মাঝে ছেড়ে দেয় । না হলে রাজেনের মাকে রেখো। অবসর পেলেই অৰ্চনা নিজের বালিশটা কঁধে করে এনে সুমনার খাটে শুয়ে থাকবে—ফঁাকে-ফাকে শোবে ; যতদূর সম্ভব দুপুর রাতের পাড়িটা সুমনাদির সঙ্গে কাটিয়ে দেবে সে। রাজেনের মীর সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে ; পাচ টাকা চেয়েছিল এ জন্যে, তিন টাকায় রাজি করানো গেছে । কাল থেকে শোবে । রাজেনের মা থাকলে অৰ্চনার নিজের ঝুকিট ১২৬