পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘যার কাছে মন খোলে তার কাছে বলি আমি, তোমাকে ভাল লাগে তাই বলি |’ হারীতের গলায় ঘের টোপ ও সঙ্কোচ ঘুচে যাচ্ছে যেন । কী করবে অর্চনা ? হগরীতের তাকে ভাল লাগে সে তো ভাল কথা । নিশীথ সেনের মত মানুষকে ভাল লাগে না যার, অর্চনাকে তার ভাল লাগে ; কেমন ষেন একটু অসঙ্গত কথা বটে। কিন্তু কোন দিক দিয়ে কী রকম চেতনা বৃত্ত হচ্ছে বলে অর্চনাকে হগরীতের ভাল লাগে ? হয় তো কিছু নয় জিনিসটা—অস্বাভাবিক কিছু নয়—সরল সহজ স্নেহ-মমতার ব্যাপার । কলকাতার কাশি রক্তে অণর পলিটিকসের বত্রিশ তাতে ঝলসে গিয়ে—এখানে মায়ের কাছে এসে মাতৃ ই নY পেয়ে, অৰ্চনাকে পেয়ে বসেছে যেন—ম মাসি রানু ভানু—এমন-কি পাডার বৌদি- দিদির দাবিও এক অৰ্চনার মেটাতে হবে । পাতানে বৌদি বা দিদি আছে কেউ হারীতের—জলপাইহাটতে ? না নেই তো । নেই –অৰ্চনা খুব নিবিডভাবে সমস্ত জলপাইহাটিতে জগল ফেলে কাউকে ধরে অনিবার চেষ্টা করছিল, কোনো নারীকে—বয়সে বড়, সমান, ছোট—হারীতকে যে টানে । না, কাউকেই মনে করতে পারছে না সে । ভগবতে-ভগবতে হারাতের উপর কেমন একটা মমতা বোধ হল অৰ্চনার । 'ক তদিন থাকবে এখানে ? ‘বেশি দিন না । মা একটু ভাল হয়ে উঠলেই চলে যাব । সময় নেবে অনেক একটু ভাল হয়ে উঠতেও । তাই মনে কর তুমি ? হারৗত তার চুলের ভিতর যেন মুক্ষির জাঙ্গাল নেড়েচেড়ে ভেঙে আঙল চালিয়ে নিয়ে বললে । ‘আমি কিছু মনে করি না, ডাক্তার বলছেন । “কিন্তু অত দিন আমি কী করে থাকব জলপাইহাটতে ? অর্চনা কোনে। কথা বললে না ; হারীতের দিকে তার চোপ ছিল না, কলকাতায় কোথায় গিয়েছে নিশীথ, কী করছে, এরও অতিরিক্ত একটা ধীর নিস্তট ভাবনায় মনটা ভরে ছিল তার । "চলে যাবে কলকাতায় ? জলপাইহণটিতে থাকবে না ? ‘এইখানেই তো থাকবার আগমণর ইচ্ছা ।” ‘তবে ?