পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেন—অনেকদিন থেকে । নিশীথবাবু সব বলেছেন আমাকে । তার কাছে শিখেছি-জেনেছি অনেক কথা । তিনি বলেছেন, এই রকমই ছিল—এই রকমই প্রায় থাকবে । বরাবর এক দল লোক পৃথিবীকে শোধরাবার চেষ্টা কয়বে, বরাবরই খুব নির্দোষ মন নিয়ে—যেমন তুমি করতে চাচ্ছ—কিন্তু তাই বলে অন্যেরা তো নির্দোষ নয়, তাদের জ্ঞানপাপ খণ্ডানোও শক্ত ; আজকের এখনকারই সুখ চায় তারা ; নিজের সুবিধে সুখই চায় প্রতিটি ব্যক্তিই, যে-কোনো উপায়ে হোক ; আজ যদি প্রায় সকলে মিলে ভাল হওয়া যায়, আত্মত্যাগ করা যায়, তা হলে তিন পুরুষ, ধরো, বড় জোর দশ পুরুষ, পরে যে বেশ সুস্থির শুভ ব্যবস্থা হতে পারে পৃথিবীর সকলের জন্যেই, এ প্রস্তাবে সায় দেবার মতন ব্যক্তি বা জাতিমন এত কম যে তা নিয়ে কোনো রকম বড় চূড়ান্ত কাজ কিছুতেই চলতে পারে না । চোখের সামনে সব সময়েই সৎ দৃষ্টান্ত জিইয়ে রাখা দরকার । যেখানে সবই প্রণয় সহজ ও সরল—সেখানে স্বর্গের জন্যে অসাধ্য সাধনের সত্যিই বিশেষ মূল্য আছে ; পৃথিবীকে একেবারে অন্ধকারে গড়িয়ে পড়তে কেবলি বাধা দিয়ে চলেছে চণর হাজার পণচ হাজার বছর আগের জানা ইতিহাসের সময় থেকে আগজ পর্যন্ত । ‘বাবা এই সব কথা বলেন, আমি জানি, হারাত বললে, ‘আগর তুমি তোতা— পড়ার মত সে সব বলে যাও আর বিশ্বাস করো ?’ অৰ্চনার দিকে সুসন্দিগ্ধ চোখ তুলে তাকিয়ে হরীত বললে । “নিশাথবাবুর চেয়ে বেশি ভাল, বেশি নির্ভর করা যায়, এ রকম কারো সঙ্গে দেখা হয় নি আমার । ’ ‘কী হিসেবে ভাল ?’ ‘তোমার কাছে অত খুলে বলতে পারব না আমি । ‘ভাল মানে ভাল মানুষ ? ‘তা তো নয়ই । তোমাকে এক হাটে বেচে হারীত, অণর এক হাটে কিনে আগনতে পারেন তিনি ।” হারীত তাকিয়ে দেখল, কথা বলতে-বলতে কেমন একটা আভা এসে পড়েছে যেন অৰ্চনামাসির মুখে । তা হলে সেই পুরুষ মানুষটিকে কি ভালবাসে আচনামাসি ? না তাকে কামরিক্ত চোখে তাকিয়ে দেখতে পৃথিবীর সব বস্তুর চেয়ে সব চেয়ে বেশি ভালবাসে ? - এই শেষের জিনিসটার ভিতর থেকেও তো S88