পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিকে চোখ ফিরিয়ে কেমন যেন এক রকম মনের হঠাৎ ঔজ্জ্বলো বললে, "ঠিক, শরীরটাকে ভাল করে নেওয়া দরকার । কেমন অবসন্ন হয়ে পড়েছি । ভারী অসুখবিসুখ হয় নি, তবে দুর্বল হয়ে পড়েছি খুব । ভাল হতে হবে।’ ‘এইখানে থাকে। সেরে ওঠে, এ দেশটাকে যদি ভাল লাগে— থেকে যাও, কাজ করে—’ 'ক দিন থাকবে তুমি এখানে ? ‘আমি ? মৃত্যু অব্দি । হারীত একটু চুপ করে থেকে বললে, তা হলে আমি যদি থাকি, তা হলে একজন লোক হাতের কাছে পাওয়া যাবে তে। আমার মৃত্যু পর্যন্ত ? ‘ই , কাজে হাত দিলে আমি তোমার সঙ্গে আছি । আমার যত দিন কাজ করবার ক্ষমতা আগছে ? ‘জায়গাটা তে নতুন দেশের এলাকায় পড়েছে । ভালবেসে কাজ করতে পারা যাবে তো ?’ যেন তুমি ভালবাসো না কাউকে । হগরীত জামরুলের অগণন প{তর ভিতর সাদণ-সদণ ফলের দেশে বাতাসের অ{সা-যাওয়ার এখন খানিকট নিঃশব্দ, তবুও সমুচ্ছল, ব্যবহারের দিকে তাকিয়েছিল । পাতাদের গুপ্ত রাজ্যে একটা ফিঙে বসেছিল ; উড়ে গেল । শিমূল জামরুলের ঘন ঘেঁষাৰ্ঘেষির ভিতর কোকিলটাকে দেখেছিল একবার হগরীত । অণর দেখছে না । কিন্তু একজন মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ; সে তো অনেক দিনের কথা । আমি মরব কিংবা তুমি মরবে—অনেক দিন পরে হয় তো । কিন্তু সেইদিন পর্যন্ত কি এই রকমই থাকবে সব ?’ আচনি উঠে দাড়াল—‘অত দূরের কথা ভাবি না আমি। মরার কথাও ভাবি না । এটা যে নতুন দেশ, তাও ভাবি না । শরীরটাকে ঠিক করে নাও । থাকো এখানে, কাজ করে । ভালবেসেছ কি কিছু ? ভালবেসেছি”—আরো খুলে পরিষ্কার করে বলতে গিয়ে, হরীত অনুভব করল আচনি জানতে চাচ্ছে না । উড়ো মরণলের স্বৈরী অণগ্রহে নয়, সেটাকে শাভ করে নিবিড় নিবিষ্ট হয়ে হরীত যা বলতে চাচ্ছে সেটা বুঝে দেখতে চাচ্ছে না আচনি ।