পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অন্তঃশীল সাড়া নিয়ে উড়ে আসছিল—চলে যাচ্ছিল রাত্রির বাতাস । ‘জোৎস্না এসে পড়েছে । অণপনি পড়বেন ? বাইরের আকাশে সাদা মেঘে কেমন আলো—“না, পড়ব না, বগতিটা নিভিয়ে দেওয়া যাক ৷” বাতি নেভাতেই চারদিক থেকে ছুটে এসে স্থির হয়ে রইল নানা রকম জ্যোতির্ময় জ্যামিতিক খণ্ডের মত ভিতরের জ্যোৎস্নাগুলো । ‘চণদটাকে তো দেখছি না' । ‘উপরে উঠে গেছে।’ ‘উপরে ? বেশি কি রণত হল ?’ 'না, আজি সপ্তমী তিথি কিনা । বিকেলবেলার থেকেই টঙে চড়ে অাছে চাদ । কী খুঁজছেন ; সিগারেটের টিনটা ? এই যে আমার সোফায় আমার কোলের উপর’—কোনো কথা না-বলতেই নিজের সোফার থেকে উঠে একটু এগিয়ে এসে হাত বাড়িয়ে টনট তুলে নিয়ে বললে, “কিছু মনে করবেন না, একটা সিগারেট খাচ্ছি। নিন অণপনি একটা ।” ‘দেশলাই নিন।’ দেশলাইয়ের একটা কাঠি জ্বলিয়ে দুটো সিগারেট জ্বালাতে গিয়ে পরস্পরের খুব কাছাকাছি এসে পড়ল ; দুটো কাঠি জ্বালালেও তো হত একটার পর একটা ধীরে সুস্থে–ছু জনের দুটো সোফার দূরত্বের ভিতর বসে থেকে ; এরকম কথা ভাবতে গেল না কেউ । মনের অবস্থা তাদের পরস্পরকে কেমন যেন কাছে টেনে এনেছে । টেলিফোন বেজে উঠল, নিশীথ শুনতে পেল প্রথম । বললে না কিছু নমিতাও না শুনেছে যে তা নয় ; সহসা সাড়া দিচ্ছে না । ‘আপনার টেলিফোন নমিতা দেবী ।” ‘শুনেছি । যাচ্ছি । বেরুবেন কি আজ ?’ ‘না ।” ‘চলুন, মোটরে বেরিয়ে আসি । ‘কোন দিকে ?’ ‘চৌরঙ্গিতে চলুন। আমার একটু মার্কেটিং করতে হবে”—নমিত বললে । "এত রণতে ?’