পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থাকবে, ঝড় থাকবে, ঠাণ্ডা হয়ে যাবে সব । বৃষ্টি কিছু-কিছু পড়ছে, সব সময়েই যেন আসছে-আসছে । কিন্তু বেহায়ণ বৃষ্টির নাকানি-চোবানি নেই।’ 'ঝমঝম করে খুব বৃষ্টি পড়ে অন্ধকার রাতে ; ভাল লাগে না আপনার ? ‘লাগে, কিন্তু আজ নয়, এখন নয়, মনের অবস্থা এখন যে-রকম তাতে কেবলি অন্ধকার ভাল লাগে ; মেঘের বাতাসের অণর বিদ্যুতের জিত ভাল লাগে জলের উপর ।” ‘মানে ঝড় চাই ? নিশীথ কোনো উত্তর দিল না । ‘জল চাই না ? ‘না ।” ‘ঝড়, অন্ধকার, বিদ্যুৎ চাই । যদি শিলাবৃষ্টি হয় ? এখন চেণত মাস তো । ‘কেমন হত সেই বড় তাহলে ?”—কে যেন জিজ্ঞেস করল । কেমন হত সেই অন্ধকার ? অনেকদিন পরে জেগে উঠে তার পর সূর্যের মুখ ? বাতাস নেই, মেঘ নেই, সমতল ভূমিতে অনেক পাহাড় এসে পড়েছে যেন চগরিদিকে—নিঃশব্দ অন্ধকারের । একটা আরশোলা সে করে মাঝশুন্য দিয়ে উড়ে কোথায় দেয়ালের আগবছায়ায় ঠিকরে পড়ল । দেখল দু জনে । আরশোলাটা আবার উড়ে হারিয়ে গেল অন্ধকারের ভিতর, কোথায় । চুপ করে চুপ করে উত্তরোত্তর নিস্তব্ধতায় আঁকিবুকির শব্দহীন অসমতল ছড়ানে অনর্গল পাহাড়ের অন্ধকারের ভিতর তার বসেছিল । ‘ঝড় হচ্ছে না আজ রাতে । রাত কি ফুরিয়ে যাচ্ছে ? কটা বেজেছে ? “সোয়ণ চারটে । সেই কাল মেঘটাকে দেখছি না তো এখন অণর ” ‘আকাশে মেঘ নেই তা হলে ? অণকণশে কি তারা জ্বলজ্বল করছে ? ‘হঁ্যা, সমস্ত আকাশটাকে কেমন চমৎকার দেখাচ্ছে নিশীথবাবু। এক টুকরো মেঘ নেই কোনোদিকে, কেবলি আপলো, কেবলি জ্যোতিষ্ক— চলুন ছাদে উঠি গিয়ে, নক্ষত্র দেখব । ‘চলুন । "জিতেনের টেলিস্কোপ অগছে ?? ‘নেই । জিতেনকে ছাদে নিয়ে গিয়েছিলাম দু-তিনদিন রাতে । ডেক চেয়ারে বসেছিলাম আমরা, ব্যবসা-টীকাকড়ি-ইনকাম ট্যাক্সের কথাই বললে জিতেন । ゞb"