পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘পেয়েছি”, জিতেন বললে, “এই যে সঙ্গে-সঙ্গে লম্বা-লম্বা দড়ি । তোমার নেয়ারের খাটের চারিদিকে চারটে লম্বা রড দেখেছ তো, বেঁধে ঠিক করে নাও’—ঘরের এক কোণে একটা মস্ত বড় আলমারি খুলে ধপধপে নেটের মশারিটাকে বড় একলতি সমুদ্রফেনার মত নিশীথের বিছানার দিকে ছুড়ে মণরল জিতেন । ‘তুমি ভেবেছিলে আমার স্ত্রীকে দিয়ে মশারি পাঠিয়ে দেব ! "এত রণতে মিছেমিছি কাউকে বিরক্ত করা ভাল হত না । ভগরি খাস মশারিটা তো তোমার, চমৎকার লাকসের গন্ধ আসছে—' একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল জিতেন দাশগুপ্ত । বিয়ে করেছে বলে সে দূরে সরে গিয়েছে—সরে যাচ্ছে—তার অনেকদিনের অন্তরঙ্গ মানুষরাও তাই মনে করে । এক কাপ চা চাইল না নিশীথ, একটা সিগারেট চাইল না । বোর্ডিঙে খেয়ে এসেছে মিথ্যা কথা বলে, না-খেয়ে চাদর মুড়ি দিয়ে পড়ে রইল—এর আগে যতবার নিশীথ কলকাতায় এসেছে নিশীথের দাবিদাওয়। মেটাতে গিয়ে ভালবাসার নেবুর কচলানিতে প্রণয় তিতে হয়ে উঠত জিতেনের মন । কী রকম অনির্বাচন হয়রানির দিন গিয়েছে সে সব । অপর এখন ? ‘কিছু খাবে নিশীথ ? এক কাপ চা ?’ ‘তুমি ওপরে যাবে না জিতেন ? ‘যাচ্ছি। একটা সিগারেট ? সিগারেট পেলে হত নিশীথের । কিন্তু সিগারেট চাওয়া মানে জিতেনকে ওপরে পাঠিয়ে দিয়ে রণত দুটোর সময় আমার চক্ষুস্থির, জিতেনের স্ত্রীরও । “সিগারেট ? না এখন খাব না দাশগুপ্ত । দলে পড়ে এক-আধটা খাই । খাওয়ার অভ্যেস নেই তো আগমণর ।” ‘মশারিটা টানিয়ে নাও । দিচ্ছি টানিয়ে—’ ‘আমি নিচ্ছি টানিয়ে ।” ‘তোমার বিছানার পাশেই সুইচ । বিছানায় শুয়ে হাত বাড়িয়েই পাবে ; এ কামরার সব চেয়ে চড়া আগলো জ্বলে উঠবে ; দিনের মতন দেখাবে ঘরটাকে । নীল শেডের আলো জুলুক। দরকার হলে নিভিয়ে দিও । সুইচটা উত্তর দিকের দেয়ালে—ঐ যে হোৎকা টিকটিকিটা যেখানে—ঐ যে—অণঃ বাস—পোকাটাকে সাবড়ে দিল— ነታ