পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দরকার হবে না হানিফের । হানিফ ঘড়ি ঠিক করে চলে গেছে । অন্দরের দিকের দরজা জানলাগুলো বন্ধ করে দিল নমিতা, ফ্যান খুলে ও-দিককার জানলাগুলোর পর্দা টেনে স্ল্যাক্স কোট খুলে ফেলে শুয়ে পড়তেই ঘুমিয়ে পড়ল । ঘুমের ওষুধ লাগে নি আজ । বাথরুম থেকে স্নান সেরে ধোপুরস্ত পাঞ্জাবি ধুতি পরে বেরিয়ে পড়ল নিশীথ । কাছেই একটা সেলুনে দাড়ি কামিয়ে নিল । জলপাইহাটির থেকে পঞ্চাশ টাকা হাতে নিয়ে নেমেছিল, এখন কুড়ি-পঁচিশ টাকা হাতে আছে । সুমনকে শিগগির টাকা পাঠাবার দরকার নেই, দেড়শ টাকায় মাস তিনেক চালাতে পারবে এক মানুষ ; ডাক্তারকে পাচশ টাকা দিয়ে এসেছে । মাস তিনেক চলবে ওষুধ, পথ্য, ভিজিট, ইনজেকশন। ভানুর জন্য কিছু টাকা দেওয়া দরকার নিশ্চয়ই সুবলকে, কিন্তু সেটা অবিলম্বে না দিলেও চলবে ; কিছু ফলটল কিনে দেওয়া দরকার বটে ভানুকে । কিন্তু খানিকটা টাকার যোগাড় না করে কোনো দিক দিয়েই কিছু করবার ভরসা পাচ্ছে না নিশীথ । কোথায় টাকণ পাবে সে ? চারদিককার ট্রাম, বাস, মোটর, ট্রাকের নিবণর পৃথিবীতে অর্থসঞ্চয়ের কলাকৌশলট দ্রুত আয়ত্ত করে ফেলা দরকার গর, খুব তাড়াতাড়ি ; তা হলেই সেও দ্রুত, একাত্ম হয়ে ষাবে এই অপ্রকৃতিস্থ মহানগরীর এই অনর্গল অপরিশ্রুত উল্লাসকে আশ্চর্য পরিত্রুত তাণ্ডবে পরিণত করবার দুর্দশন্ত সময়যন্ত্রের সঙ্গে । কিন্তু আটচল্লিশ উনপঞ্চাশ বছরেও ঢেঁকুর তুলে হাটতে-ইটিতে যদি তাকে নিজের কায়দা-কানুন ঠিক করে নেবার কথা ভাবতে হয়, তা হলেই হয়েছে । চার দিকে কুড়ি-বাইশ বছরের ছোকরার জিপে ছুটে যাচ্ছে, ব্যাঙ্ক লুটছে, কালবাজার চিবিয়ে খাচ্ছে, বড়-বড় মনসবদারি জোগাড় করছে নতুন ইউনিয়নে, জায়গা জমি কিনছে যাদবপুর বেহালায়, টালিগঞ্জ রিজেণ্টপার্কে, বালিগঞ্জে দিব্যি ভিলা তুলে ফেলছে সব, মেয়েমানুষ নিয়ে কৃতকৃতাৰ্থ হয়ে ফিরছে । এই কলকাতfয় চাকরি জেণ গড়ি করতে হবে তাকে আটচল্লিশ বছর বয়সে ? চাকরি করে পরিবার আনতে হবে, যেখানে ফুটপাতেও মাথা পাতবার জায়গার জন্য কাড়াকড়ি পড়ে যাচ্ছে, একটা গোয়গল, ভঁইষের ভগ্নগড়, শুয়োরের খোয়াড়, গ্যারা জ—কিছু খালি নেই, সেখানে বাড়ি খুঁজে নিতে হবে তার—বাড়ি, ফ্ল্যাট, রুম—রুম দু-চারটে এক-আধটা, একটা রুমের আধখানা ჯ O&)