পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘ত্রিশ বছর অাগে । ‘সে যেন মহাসরীসৃপদের দিন ছিল এ পৃথিবীতে তখন, লক্ষ বছর আগের কথা । বললেন তো ত্রিশ বছর, বললে রবিশঙ্কর, ‘মনের অনুভূতিতে ত্রিশ বছর আর লক্ষ বছর একই জিনিস হয়ে দাড়ায়, যা-অতীত একটু বেশি দিন কেটে গেলেই কোটি বছর আগের অতীত বলে মনে হয় । নিন—’ সিগারেট কেস বের করে খুলে নিশীথকে এগিয়ে দিল, “আপনার নাম তো ভুলে গেছি। বেশ মনে করে রেখেছেন আমার নাম কিন্তু । ‘আমি নিশীথ সেন ।” “নিশীথ সেন । বা বেশ তো । সংক্ষেপে অনেকখানি । কিছুটা মেয়েদের নামের মত যেন । অণঃ-হাঃ-হাঃ হাঃ’—হাসতে লাগল রবিশঙ্কর, কোমরটা ভেঙে ধনুকের মতন খানিকটা বঁকা হয়ে গেল—‘অণঃ-হা-হাঃ-হঃ । কলকাতায় থাকেন ?? বেড়াতে এসেছি । আপনি তো এখানেই আছেন রবিবাবু ? ‘আমি মাদ্রাজে আাছি এখন।' "মাদ্রাজে ? সেখানে কী ? 'স্কটিশ থেকে বি-এ পাশ করেই তো বিলেত চলে গেলুম । বি-এ-তে অনাস" পাই নি । বিলেতে গিয়ে আই-সি-এস দিলুম। হল না, অ্যাকাউন্টসে গেলুম—ইনকরপোরেট—এখন মাদ্রাজে ডেপুটি অ্যাকাউণ্টেণ্ট জেনারেলের পেস্টে অগছি।” রবিশঙ্কর তো একটা বোকা ছেলে ছিল । লম্বা-চওড়া মানানসই চেহারার নিরেট বালখিল্যতাই তো ওকে সকলের কাছে হাস্যাস্পদ করে রেখেছিল । স্কটিশ চার্চ কলেজ ; ত্রিশ বছর আগে । স্ক্রিম জণর সাহেব ক্লাশে এসেছেন, লেকচার দিচ্ছেন, চটপট ব্ল্যাকবোর্ডে সাহেবের লেকচার লিখে ফেলতে লাগল রবিশঙ্কর শর্টহ্যাণ্ডে । ও তখন শর্টহ্যাণ্ড শিখছিল । মাঝে-মাঝে ছেলেদের দিকে তাকিয়ে হগসতে লাগল । সাহেব দেখতে পেয়ে বের করে দিলেন রবিশঙ্করকে । খানিকক্ষণ পরে ঢ্যাঙা দেণরগোড়ায় এসে হাজির হয়ে বললে, May I Come in, Sir । স্ক্রিমজার ঢুকতে অনুমতি দিলেন । ই করে স্ক্রিমজার সাহেবের মুখের দিকে তাকিয়ে মিনিট দশেক কেমন গম্ভীর অনৈসর্গিক মূখতায় বসে রইল নিজের জায়গায়, তারপর কেমন একটা ২১৩