পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জিতেন দাশগুপ্ত কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললে, “আমার ভাইদের আমি খুব ভালবাসি, ওরা তা বুঝবে না । আমার মত ভালবাসতে পারবে না । মাঝেমাঝে কেমন কঠিন হয়ে ওঠে মন ওদের কথা ভাবতে গিয়ে । থাক, মনটা নরম হোক, মৃদু হোক, স্নিগ্ধ হোক । নমিতা খুব সাচ মেয়েমানুষ । মশারি টানিয়ে নাও নিশীথ ।’ নীল শেডের বাতিটা জ্বলছিল । জিতেন দাশগুপ্ত চলে গেছে । নিশীথ র্দগড়গল । ঘরের ভিতর কয়েকবার পয়চারি করে বণরণ নদণর দিকে খোলা দরজাটা বন্ধ করে, এল জিতেনের টেবিলের কাছে । কোথাও বাথরুম আছে কি না জিতেনকে জিজ্ঞেস করা হয় নি । নীচের তলায় কোথাও চাকরবাকর বা অন্য কেউ আছে কি না বলে যায় নি জিতেন । তাহলে এখন ঘুমোতে হবে । কিন্তু কী করে আসবে ঘুম । জিতেন বিয়ে করেছে শুনেই ঘুমের চটক ( এসেছিল একসময় ) একেবারেই ভেঙে গেছে । বিয়েই শুধু করে নি। একটা ফিরিঙ্গি মেয়েকে বিয়ে করেছে । এরপর জিতেন দাশগুপ্তকে দিয়ে কিছু অণর করে উঠতে পারবে না নিশীথ ৪ ও নাগালের বাইরে চলে গেছে । লেক রোডে বাড়ি ছিল জিতেনের—হৃদয় ছিল মানুষটার—ভারি অন্তরঙ্গতা ছিল নিশীথের সঙ্গে । নিজেদের ভাইদেরও ভালবাসত জি তেন, কিন্তু ওর ভাইয়ের } উচ্চণ্ডে গেছের, দাদার কাছ ঘোষতে চায় না । নিজেদেব পায়ের ওপর দাড়িয়ে গেছে সব অনেকদিন থেকেই । বেশ বড়-বড় চাকরি ব্যবসা করছে তারা । এ-রকম অবস্থায়—জীবনের শেষ কটা বছর জিতেন দাশগুপ্তের এখানে এসে কাটিয়ে দেবার ইচ্ছা ছিল নিশীথের | পদ্মার ওপারের দেশটাকে তার খারাপ লাগে না, যেখানে একটা বড় প্রাইভেট কলেজে কাজ করছে সে, এ কাজে ভুয়ো মর্যাদা আছে, টাকাকড়ি নেই ; কুড়ি বাইশ বছর কলেজে কাজ করবার পর এখনও দেড়শ টাকা মাইনে । কলেজের কাজটাকে মজুরির কথা বাদ দিয়ে, এমনি কাজ বা রুচি-রচনার দিক দিয়ে দেখতে গেলে, কোনোদিনই ভাল লাগেনি তার ঃ সঙ্গে-সঙ্গে লাইব্রেরিতে নতুন কিছু-কিছু বই, প্রকৃতিতে এসে পড়ত রৌদ্রের ফেয়ারা, নীল উজ্জ্বল চক্রবাল, আকাশে হরিয়াল , ফিঙে, বক, বড়-বড় সুন্দর ওয়াক পাখি, কলেজের ময়দান পেরিয়ে খানিকটা দূরে গেয়ে রাস্তা ঘোষে টি ঢ়ি তেপান্তর, ঝিল, কানসোনা মধুকুপী পরযুপি ঘাস, শরের বন, শনের হোগলার ক্ষেত, SO