পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপরিমেয় কাশ, হঠাৎ এক-আধট নিখুত মুখসৌষ্ঠব, স্ত্রীলোকেরই, আরো দূরে বুনো ইসের জলা মাঠ, স্নাইপ, সকালের উড়িসুড়ি নিস্তব্ধতা তখন ভাল লগত নিশীথের । ভাল লাগত বটে, কিন্তু কলেজের, বিশেষত মফস্বল কলেজের অধ্যাপকের পক্ষে বনের বেড়াল, ভীম, ভেঁাদড়, সজারুর চরণয়-চরায় ঘুরে বেড়ানো, বালিইস, মরাল, ওয়াক পাখিদের ওড়াউড়ি আসা-যাওয়া, ভালবাসা দেখবার জন্য ইটুেজল ভেঙে, সারাটা দিন ডুবজল গলাজলের দিকে ভেসে যাওয়া, সমস্তটা শরৎরেীদ্রের—শালিধানের—বরোজের উডু-উডু পান বনের ঝরঝরে দিনটাকে, রাতের নক্ষত্রনিঝ"রে এসে নিস্তন করে রাখা, এ সব কাজ মোটেই সম্মানজনক নয়, এ সব নিয়ে সচেষ্ট থাকলে অধঃপতিত বিবেচিত হবে সে ; কারুরই সায় পাবে না । এ সব কাজ মানুষের পক্ষে সম্ভব, কিন্তু ওরা বলে অধ্যাপকের কাজ আলাদা, রুচি ভিন্ন, দায়িত্ব অণরএক রকম ! অধ্যাপক যে মানুষ নয় তা তো নয় । কিন্তু ছণক মানুষ, পরিস্রাত জলের মত কুঁজেণ, কলসি বা ওয়াটার কুলারের ভিতর । কী হবে ও-রকম জল হয়ে ; নিশীথ হতে চাচ্ছিল নিঝ"রের জল, কিংবা জল, সময়সীমার অব্যক্ত । থেকে নিঃসৃত সাগরের । কলেজের কাজ ছেড়ে দেবে সে । কলকাতার চেয়ে মফস্বলের প্রকৃতিলোক ঢের ভাল লাগে তার । সেই সব মানুষদেরও ভাল লাগে—মফস্বলের গ্রামপ্রান্তর থেকে উপচে পড়ে যে-সব মানুষ—কার্তিকের বিকেলের রোদে, চোত-বোশেখের শেষ রাতের ফটিক জলের মত জোৎস্নায় । এসব মানুষ সব ঋতুতে সব সময়েই ভাল। এদের অসুস্থত নেই যে তা নয়, অভাব অনেক । কিন্তু আধুনিক সভ্যতার বিষক্রিয়া অনেকদূর পর্যন্ত ঠেকিয়ে রেখেছে ওরা । যে-প্রণালীতে রুখেছে তা বিজ্ঞানসম্মত নয় ; কিন্তু বিজ্ঞান কত দিনে মানুষকে কত বেশি অণর দান করতে ? দেহের সুবিধা ছাড়া কিছু কি পারছে আর, দান কবতে ? পারবে কি কোনোদিন ? মানুষের হৃদয়েরও শুভ সংহতির কোন লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না । সেটা হবে কি ? সেটা হবে বলে মনে হয় না । নিশীথ ঘরের ভিতর পয়চারি করছিল । ঘণ্টাখানেক হল জিতেন দাশগুপ্ত ওপরে চলে গেছে । নিজের মনের—এমন-কি মাঝে-মাঝে পৃথিবীর মনের সমস্যা নিয়ে এমন নিমগ্ন হয়ে পড়ছিল নিশীথ ষে ঘরের বাইরের অন্য কোনো দিকেই খেয়াল ছিল না । মশারিটা টানাতে হবে । ঘুম হবে না। রক্তের কোনো কণিকায়ই ঘুম নেই, কিংবা অনুভূতির, কিন্তু ÁM ఏ.ఏ.