পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রফেসর থাকবেন না । মোহিতাও নয় । প্লঞ্চ শ-ষাট বছর পরে—প্রফেসর তো চলে গেছেন তখন । —কেমন একটt ভtঞ্জী নিঃশ্বাস পড়ল মোহিতার । 'আপনি নাগাল পাবেন নিশীথবাবু পঞ্চাশ বছর পরে ? "মামার বয়স তো পঞ্চাশ বছরই প্রায়, উনপঞ্চাশ তো ও*র ? 'উনপঞ্চাশ পেরিয়ে ছ মাস হল ।” ‘সাড়ে উনপঞ্চাশ, আমার আটচল্লিশ ।' হরিত বলে, তার বাবার বয়স, উনপঞ্চাশ ; নিশীথের হিসেবে আটচল্লিশ, সাতচল্লিশও হতে পারে, খুব সম্ভৰ আটচল্লিশই । মোহিতা নিশীথকে দেখেছে এর আগে । এই ভদ্রলোকটির নাম যে নিশীথ, নিশীথ সেন, তাও জানা অাছে তার । এ বাড়িতেই দেখেছে প্রফেসর ঘোষের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল নিশীথ শেষবার যখন—উনিশশ ছেচল্লিশে, মে, মাসে । মনে আছে মোহিতার । প্রায় ঘণ্টা দেড়েক ঘোষ সাহেবের ঘরে বসে ঘোষের সঙ্গে কথা বলেছিল সেবারে নিশীথ, সকাল বেলা তখন, আরকেউ ছিল না তখন ঘোষ সাহেবের ঘরে । মোহিতা ছিল, নিশীথ ছিল, ঘোষ ছিলেন । কলেজে গরমের ছুটি তখন । প্রফেসরের লাগেজ বাধাছাদা চলছে ।. দু-তিনদিনের মধ্যেই মুসৌরি যাবেন সপরিবারে । মোহিত মাঝে-মাঝে ঘোষের ঘরে ঢুকছে, মাঝে-মাঝে বেরিয়ে পড়ছে; আবার এসে মিনিট পনেরকুড়ি ৰসে যাচ্ছে, মোহিত প্রফেসরের ঘরে ঢুকে সোফায় বসলেই ঘোষের নজরটা মোহিতার দিকে হেলে পড়ছে । নিশীথ যেন নেই। এটা স্ত্রী-ঘেঁষা, ভাব, বড়লোক-ঘেঁষা ভাবও বটে । মোহিতা ডিরেক্টর জেনারেলের মেয়ে আর নিশীথ মফস্বল কলেজের লেকচারার । এ সব বিষয়ে বেশ ওয়াকিবহাল, ঘোষ । কিন্তু জিনিসটা ভাল না । মোটেই ভাল না। একজন কৃতী মানুষ টীকাকড়ির দিক থেকে অকৃতী বলে তাকে উপেক্ষা করা ঘোষের মত, অধ্যাপকের উচিত কি ? কিন্তু তিনি তো তা করেন। নিশীথের মুমুঙ্গু চোখ ঘোষ সাহেবের দিকেই শিকেয় তোলা, তবু, অতি কচিৎ কোনো কথার উত্তর দিতে মোহিতার দিকে ঘাড় ফেরাচ্ছে নিশীথ, চোখ ফেরাচ্ছে না ; কেমন, একটা সন্ত্রমের বোধে মোহিতার চেয়ে নিজেকেই হয় তো বেশি সভ্রান্ত করে তুলবার চেষ্টা করে । সেটা যে রীতির ভুল, মনেরও অসঙ্গতির পরিচয় Ꮈ8Ꮌ