পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সারারাত এখানে উঠে, বসে, শুয়ে কাটাতে হবে। অথচ ফ্যানের কোনো ব্যবস্থা নেই । নিশীথ ঘরের কোণে একটা ময়লা নড়বড়ে ড্রেসিং টেবিলের কাছে মাথা ছেট করে দাড়িয়ে জিতেনের নতুন অদ্ভুত পতঙ্গ জীবনের কথা ভাবছিল । না কি পাখা খুঁচিয়ে শুয়োপোকা হয়ে গেল ? ওপরের থেকে একটা টেবল ফ্যান পাঠানো যেত না ? কিন্তু ভেবে লাভ নেই । এ হবেই। একটা ভাল কথা মনে পড়েছে ; কলকাতায় আসবার আগে আণসীমের দিকে গিয়েছিল নিশীথ । হাফলঙে গাড়ি থেমেছিল অনেকক্ষণ; একজন আসামি ভদ্রলোক নেমে গেলেন, চলে যাবার সময় নিশীথকে ধন্যবাদ জানিয়ে, ( কেন যে, ভুলে যাচ্ছে নিশীথ ), তার পকেটে এক পণকেট ভাল সিগারেট গু*জে দিয়ে, চলে গেলেন । সে সিগারেট কোথায় রাখল নিশীথ ? নিশ্চয়ই ফেলে দেয় নি । নিজে খায়নি, কাউকে খেতেও দেয়নি—মনেই ছিল না তার প্যাকেটটণর কথা । কিন্তু কোথায় রেখেছে ? বার কয়েক পকেট হাতড়ে, বিছানা-বালিশ উলটে-পালটে, হোল্ড অলটাকে তচনচ করে, দেখল । নেই কোথাও । টস-টস করে ঘাম ঝরে পড়ছে, মাথাটাই ঘামিয়েছে সবচেয়ে বেশি । কেমন গণ বমি-বমি করছে। ঘরের জানলাগুলো খুলে দিল । সুটকেসটা খুলে ভাল করে খুজে দেখতেই বেরিয়ে পড়ল প্যাকেটটা— সিগারেট হাতে করে বিছানায় এসে বস ল সে । কিন্তু দেশলাই তো নেই, দেশ লাই কেfখ ও নেই এট। হ লপ করে বলতে পারে সে । জলপাইহাট ছাড়ার পর দেশ্বলাইয়ের কোনো রকম প্রয়োজন হয় নি ; জলপাইহাটতে স্ত্র মাসের ভিতর দেশ লাই ধরেছে সে ; দেশ লাইয়ের অভাবে তাহলে সিগারেট ও খাওয়া যাবে না ; অথচ এট। জিতেন দশ গুপ্তের বাড়ি ; ওপরের ঘরে জিতেন যদি এ রকম নিঃসগড় হয়ে পড়ে না থাকত তা হলে টেবল ফ্যান, ঠাণ্ডা জল, দেশলাই সবই তো জুটে যেত তার। সিগারেটের পণকেটটা জানলার ভিতর দিয়ে ছুড়ে ফেলে দিল সে । ওপরের সে সব শব্দ থেমে গেছে একেবারে ; এইবারে চণ্ডীফুলের পাপড়িও ঝরছে না আর ; এখন তাহলে লাল ঝুমকেfর ঘুম কণ্টি কfরীকে বুকে জড়িয়ে । সময় হয়েছে তা হলে, ওপরে চলে যাবে নিশীথ । জিতেন দাশগুপ্তর দরজা খোলাই রেখেছে নিশ্চয়ই ; একবার উকি মেরে দেখে নেবে। তারপর খুঁজে বার করতে হবে মিট সেফ ; সেটা যদি বন্ধ থাকে S8