পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিশীথ মোহিতার দিকে তাকিয়েছিল । এমন ভাবে যে মোহিত হয় তে} ভগবতে পারত, কেমন যেন অস্বাভাবিকভাবে তাকিয়ে আছে নিশীথ । পুরনো পৃথিবীর সেই অধিকার ফিরে পাওয়া কঠিন এখন।' ‘সেই চীন সভ্যতার দিন নেই এখন, আর সব রকম বিশৃঙ্খলার থেকে মানুষের মনটাকে সংবরণ করতে জানা, সৌম্য চৈতন্ধে সব সময়েই স্থির হয়ে থাকতে পারা ; চীনের মতন আমাদেরও যা ছিল, নেই এখন আর । নিশীথ একটা নিশ্বাস ফেলে বললে, ‘নেই । কলকাতা ইউনিভার্সিটির কাছ থেকে কোনো ডেপুটেশন এসেছিল ঘোষের কাছে ? ‘না তো । কেন ? আগসবার কথা ছিল ?’ ‘তা তো জানি না অামি । জিজ্ঞেস করছিলাম ।’ ‘কেন আসবে ? কী জিনিস সম্পর্কে ?” ‘আপনাদের এই লাইব্রেরির ব্যাপারটা নিয়ে ।” মোহিতা তার মুখোমুখি দেওয়ালটার দিকে তাকিয়ে বললে, 'না আসে নি। এলেও কিছু হত না । ওরা তা জানে।’ ‘ভাইস চ্যান্সেলর হতে চেয়েছিলেন কি ঘোষ ?’ ‘কী চেয়েছিলেন তা জানা নেই ঠিক, মানুষ তো চ্যান্সেলার হতেও চায়’— ‘সে জিনিস অবিশ্যি ইউনিভার্সিটি কাউকে দিতে পারে না।’ ‘বড় জোর কনভোকেশনের গাউন দিতে পারে চ্যান্সেলারকে । তার লেখা বক্তৃতা পড়িয়ে শোনাবার জন্য মাইকের সামনে দাড় করিয়ে দিতে পারে, মোহিতা হাসতে-হাসতে বললে, হাসি নিবে এলে বললে, ‘একটা কিছু হতে চাচ্ছিলেন ঘোষ, কিন্তু এখন কিছু চাচ্ছেন না আর ' নিশীথ বললে, “কেমন যেন হ্যাচক মনে হয় আমার—এই ব্যাপারটার সঙ্গে ঘোষ সাহেব লাইব্রেরির ব্যাপারটা কেন জড়িয়ে ফেললেন—’ 'ত তো করলেন । ঠিকই করেছেন হয় তো, মোহিতা সত্যিই যেন নিজের মতের ভিত্তি থেকে একটু না নড়েচড়েই বললে । "এর একটা বিহিত করুন।' ‘অামার শক্তি নেই ।” দু কাপ চা নিয়ে এল রিপেন। দুখানা-দুখানা বিস্কুট । নিশীথের মুখের দিকে তাকালই না সে । প্রফেসর সাহেবের স্ত্রীর সঙ্গে এত ক্ষণ ধরে কথা বলছে २6>