পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাথো ঠেকছে ঘোষের । তবে স্কটিশে থাকতে বেশ মেলামেশা হয়েছিল আমাদের সঙ্গে । বিনয়েন্ত্ৰ মুখুজো, শুভ্রাংশু, বরুন দত্ত, সীতেশ ভটচাজ, সোমেন মহলানবিশ, আমি—খুব মিশেছিলেন তো ঘোষ আমাদের সঙ্গে । ‘এই তো তিনবারের বণর দেখা আগমণর সঙ্গে’—মোহিতা বললে ।

  • কণর ?’
  • অণপনার ।” সোজাসুজি মোহিতার দিকে না তাকিয়ে, তার মিহি ঘোমটার আড়ালে খোপার দিকে তাকাল । তার ভুরুর দিকে, টিকলো নাকের দিকে। সমুদ্রফেনার মত শাড়িটাকে প্রকৃতির সাদা জিনিসের মত দেখাচ্ছিল, মানুষটির অন্য রকম রঙের প্রেতপরায়ণতার পাশে, প্রকৃতিতে এ রঙ নেই । *ই্যা গতবার ঘোষের ঘরে বসেছিলুম আমরা । অনেক কথা বলেছিলেন আপনি । ঘোষের স্ত্রী যে তা আমি বুঝতে পারি নি, অবাক হয়ে ভাবছিলুম ভারী চমৎকার ; জমিয়ে রেখেছে সব—স্নিগ্ধ করে দিচ্ছে ; কেমন সুন্দর বাড়ন্ত গড়ন । বিশেষ কোনো কথা বলছিলেন না ঘোষ । চিনতে পারছিলেন না যেন আমাকে । আমতা-আমতা করছিলেন । বুঝেছিলেন সব আপনি, নিজের কলেজি সতীর্থের মুখোমুখি বসে যে-অস্বস্তি বোধ করছিলাম সেটাকে সহজ করে রাখবার জন্য সজলতার ঘের পরিয়ে দিলেন তো সে দিন আপনি ।

কথা বলে, হেসে, গল্প করে । এর আগেরবার উনিশশ চুয়াল্লিশে, মে মাসে, নিশীথ বললে, ‘ঘোষের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলুম, ওঁর ঘরেই বসেছিলুম আমরা তিনজনে । সে দিন বেশি কথা বলেন নি আপনি । খুব চওড়া একটা বই-এর পাশে-পাশে মার্জিনে নোট টুকছিলেন । মাঝে-মাঝে প্রফেসরের কাছে জিজ্ঞেস করে নিচ্ছিলেন । ভেবেছিলুম প্রফেসরের মেয়ে, কলেজে পড়েন। সকাল বেলা বেশ ঝড়বিদ্যুৎ, অনেক ঠাণ্ডাকালের মেঘ ছিল, সে দিন । বৃষ্টি বেশি হয় নি । মোহিতা বললে, ‘একটা কথা আমি ভাবছি নিশীথবাবু । নিশীথের মনে হচ্ছিল, বড় বেশি কথা বলে ফেলেছে সে । কী দরকার ছিল এত কথা বলবার ? ঘোষের সহপাঠী যে নিশীথ সে কথা ঘোষ জানলেও তাকে তো এতদিনের ভিতরও একবার জানাতে যায় নি নিশীথ । যে-মানুষ মগডালে উঠে গেছে তার লেজটা নিয়ে-সামলাতে পারছে না বলেই কি তার লেজে হাত -૨48