পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চেয়ারটায় উঠে বসে, দুদিন ধরে ডি-ডি-টি দিয়ে ছারপোকা মেরে চেয়ারটা ঠিক করেছি। কোথায় আগছো কলকাতায় ? ইজিচেয়ারে বসে নিশীথ বললে, ‘অগছি বৌবাজারে ফিয়ার্স লেনে ৷” ‘ফিয়ার্স লেনে ? জায়গাটা বেছে নিয়েছ বটে । ‘এখন তো দাঙ্গা নেই ।” ‘কী রকম হালচাল এখন ফিয়ার্স লেনে ?” *এখন অগর-কী, সব সাপ কেঁচো হয়েছে ।

  • অগর যারা কেঁচো ছিল ?’

খুরকিনা মাছ হয়ে গেছে ? ‘হয়েছেই তো । দেশ স্বাধীন হয়েছে । ‘স্বাধীন বলে স্বাধীন, নিশীথ পায়ের উপর পা চড়িয়ে দিয়ে বললে, ‘বৌবাজারের বাজারে যা কিনি তাই ঝাল, যা রাধে তাই খাট । এমন খ্যাটনদার করে দিয়েছে আমাকে আমার বাবুর্চির । কুলদা একটা সিগারেট মুখে দিয়ে বললে, ‘এই তো ভাল, মফস্বলে কাজ করে গরমের ছুটিতে কলকাতায় এসে ফুর্তি করা । কেন বার মাস কলকাতায় এসে পচে মরতে চাইছ ? মুখের সিগারেটটা জগলিয়ে নিল কুলদা । নিশীথের দিকে টনটা এগিয়ে দিয়ে কুলদ। বললে, ‘ক। রকম বধিলে-টণধলে মফস্বলে কাজ করে ?’ পচিশ হাজার । ‘বণঃ, বাঃ, মওক ! বেশ ফেঁদেছি বেটাচ্ছেলে । কোথায় রেখেছ টাকা, পাকিস্তান ব্যাঙ্কে ?’ ‘না, কলকাতায় । লয়েডসে ।’ ‘লয়েডসে ! কুলদা একটা মিহি ভূঁচ ফুড়ে নিশীথের দিকে তাকায়, কেন, বিলিতি ব্যাঙ্কে রাখতে গেলে কেন ? কী ইণ্টারেস্ট দেয় ওরা ? সুদের জন্যেই আমাদের এত বড়-বড় দিশি ব্যাঙ্ক রয়েছে সব ।’ কুলদা সিগারেটে চেণচের্ণ টান মেরে ধোয়ার হুড়োহুড়ির থেকে নিজের চোখ দুটোকে বাচাবার চেষ্টা করতে-করতে বললে । ‘লয়েডসে রেখেছি তার একুটা কারণ অাছে । ওতে টাকাটা জমা থাকবে, টাকায় হাত পড়বে না সহজে ।” ગ૭br