পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিকেই থাকলে, অথচ চাকরি করবার দরকার নেই। করেছে অণজীবন মফস্বলে অধ্যাপনা, কলকাতায় পাবলিক সাভিস কমিশন কী করে বড় চাকরি দেৰে তাকে ? বয়সৰ্বদ্ধি থাকলেই তো হল না, শিক্ষা-সংস্কৃতিও ভুইটাপার মত বিমুগ্ধ করে বটে। কিন্তু সুশিক্ষিতকে । অন্যদের কাছেও তো ভুইফেঁাড় ব্যাঙের ছাতা ছাড়া অণর-কিছু নয় । এমনি বিদ্যে থাকলে হবে না, বিলিতি ডিগ্রি কোথায় তার—দিশি-বিলিতি এটা-ওটা টেকনিকাল জ্ঞানের অভিজ্ঞান কোথায়, বয়স কোথায় নিশীথের যে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সামনে গিয়ে দাড়বে— দাড়াতেও যদি অনুমতি দেয় তারা ? কী করবে নিশীথ তা হলে ? প্রাইভেট কলেজে মাস্টারি ? দেড়শ টাকার জায়গায় দুশ বা আড়াইশ টাকা মাইনের ? ওকে লেক-কলকাতায় পোষায় না, উত্তর কলকাতায় ও না । তা ছাড়া মইনের জন্যেই শুধু নয়, অন্য নানা কারণেই কোনো কলেজে কাজ করবে না আর সে । ছেলে, অধ্যাপক, বা গভর্নিং বডিগুলোকে দোষ দিয়ে কোনো লাভ নেই । দেশষ বাংলাদেশের বিশ শতকের ভিতরে যে-ধ্বংসের কীট রয়েছে—দিনের পর দিন তার শ্ৰীবৃদ্ধির । কিন্তু তবুও অদৃষ্টের দোষে নয়—খুব সম্ভব । কিন্তু কী করবে নিশীথ ? সে তো ডাক্তারি, আইন, ইঞ্জিনিয়ারিং, বা কোনো-রকম শিল্পব্যবসায়ের দিকেই যায় নি । দেশের ভিতর মাস্টারির চিতে জ্বলছে আজি দিকেদিকে । মাস্টারদের কোনো বন্ধু নেই আজ আর । ছেলেরা গ্রাহ করে না মাস্টারদের ঃ খুব সম্ভব তারা কম মাইনে পায় বলে । গভর্নিং বডি চোখ উল্টে কথা বলে ঃ খুব সম্ভব কম মাইনে দিয়ে এইসব নিরীহ তালকানাদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা এত সহজ, এত চমৎকার বলে । , , রণ ধর্মঘট চালিয়ে গরিব মানুষের খাওয়া-পর-মাইনের সুবিধা করে দিতে চায় তাদের নজর, ফ্যাকটরির মজুর, কিসানদের দিকে । খুব ভাল জিনিস । কিন্তু একজন ওস্তাদ বাবুর্চি বা মোটর ড্রাইভার যে-টাকা পায়, ইউনিভার্সিটির একজন লেকচারার যদি তার চেয়ে কম পায়, তা হলে সাধারণ স্কুল-কলেজের মাস্টাররণ কী পায়, কী খায়, সেদিকে কি নজর পড়বে না মাক্সিস্ট বা কংগ্রেসি বিপ্লবীদের— কিংবা, যেখানে বসেই হোক না কেন, দেশের, মানুষের মঙ্গলচিস্তা র্যারা করেন সেইসব স্বচ্ছ অনুধ্যায়ীদের ? সরকারি চাকরিতে যে যেখানে আছে তাদের চাকরির মেয়াদ ও চুক্তি যে-রকমই হোক না কেন, তাদের ছাটাই করা চলবে না । খবরের কাগজগুলো এদের সমর্থন করে লিখছে । খুব ভালো কাজ ՏԳ