পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘খবরের কাগজের অফিসে দেখ তুমি নিশীথ । দেড়শ-দুশ পেলে ঢুকে যাও । নাঃ পাকিস্তানে গিয়ে আর কী করবে। কলকাতায় থাকে, কলকাতায় থেকে যণ ও I' কুলদাপ্রসাদের বাড়ি থেকে যখন বেরিয়েছে নিশীথ তখন চারটে বেজে গেছে । সকাল বেলা চl, দু-একটা স্যাণ্ডউইচ-ডিম ছাড়া কিছু খায় নি ; প্রফেসর ঘোষের বাড়িতে এক কাপ চা, দুটো বিস্কুট, কুলদার এখানে কতগুলো পান খেল নিশীথ । বেশি সি গারেট খেয়ে, চা খেয়ে, ভাত না খেয়ে শরীরটা কেমন ঝিমঝিম করছিল নিশীথের । এখন শুয়ে পড়তে হয়, কোথাও দাড়াতে পারা যাচ্ছে না যেন আর ; কেউ যদি কিছু না মনে করে তা হলে ফুটপাথেও শুয়ে পড়তে রাজি সে । একটা বেশ ঝাঁকড়া গাছ দেখে নিয়ে তারই তলায় ফুটপাথের ওপর শুয়ে পড়তে ইচ্ছা করছিল, গায়ের থেকে পাঞ্জাবিটা খুলে একটু বিছিয়ে নিয়ে তার ওপর মাথাটা রেখে । কিন্তু মুশকিল, তাকে কেউ ভিখিরিও মনে করবে না, পাগলও ভাববে না ; কেন সে এ রকমভাবে শুয়ে পড়ল বুঝে দে থবীর জন্য তার চারিদিকে লোক জডো হয়ে যাবে । শুলেই ভাল হত কিন্তু এট।-সেটা ভেবে নিশীথ ফুটপাথের একটা গাছের গুড়ির ওপর গিয়ে বসল। গুড়ি বলে ঠিক কোনো জিনিস নেই, দু-চারটে বেশ মোট শেকড় ওপরে চাগিয়ে আছে ; মাট শেকড়ের ওপর বসে জিরিয়ে নিতে লাগল । গাছে ঠেস দিতেই ঘুম এল । মিনিট পনের-কুড়ির মধ্যেই ঘূমের চটকা ভেঙে গেল নিশীথের । নানা রকম লোকজন ফুটপাথে গাছের চারদিকে এসে হল্লা করছে, কে থেকে একটা চারপাই নিয়ে এসেছে, সেখানে গড়াচ্ছে দেশোয়ালি দুচার জন ; নীচে ময়লা কথা-কপিড ছড়িয়ে দেশসাদ, কাহার, মণহণতো মেয়ে, বুড়ি, ছোট ছেলেপিলেরা বসেছে, কঁদিছে, গড়াচ্ছে, ল্যাং মারছে, ডিগবাজি খাচ্ছে, পেটে গিট মাজায় গিন্ট মেরে বিশ্বকৰ্ম পুজোর ঘুড়ির মত পাতা ফচফচ বনবন্‌ করে তোলপাড় করে তুলছে সব । কেউ-কেউ শুকনো ডাল-পালা, রাস্তার এঁটো কাগজ, রবিশ জোগাড় করে অণগুন জ্বালাবার বাবস্থা করছে । বোধহয় রান্নাবান্না চড়বে এখন । নিশীথ গা-ঝাড়া দিয়ে উঠে দাড়াল । প্রফেসর ঘোষকে দেখা হল, কুলপ্রসাদকে দেখা হল, এখন কার কাছে যাওয়া যায় ? কলেজের চাকরির কথা এখন আর ভগবা উচিত নয় । চার-পাচ বছর ধরে কলকাতার কলেজ কর্তৃপক্ষদের কাছে さb>