পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নতুন-নতুন ছেলেদের মুখ চিনে রাখতুম না আমি কলেজে পড়বার সময় ? ‘সেটা কি সম্ভব ? নিশীথ একটু অবাক হয়ে ভাবছিল । ‘তা ছাড়া জয়নাথ কী যেন বলতে গিয়ে, না বলে, মুখে চুরুট গুজে দিয়ে দেয়ালের একটা নন্দলাল বোসের ছবির দিকে তাকিয়ে চুপ করে রইল । পরপর তিন-চার বছর স্কটিশ চার্চ কলেজের থেকে ক্রমাগত পোস্ট গ্র্যাজুয়েটি ছেলেদের মুখ চিনে রেখেছে জয়নাথবাবু এম-এ পাশ করে বেরিয়ে ইউনিভার্সিটির করিডরে বেড়াতে-বেড়াতে, এও বিশ্বেস করতে হবে ? থাকতে পারে খানিকটা মুখ চেনী জয়নাথবাবুর । নিশীথের সিগারেট নিভে যাচ্ছিল, অগস্তে দুটো টান দিয়ে জয়নাথের বাবা গয়ানাথবাবুর কথা ভাবছিল, যিনি নিশীথকে সঙ্গে করে নিয়ে একদিন উত্তর কলকাতায় গয়ানাথবাবুর দোস্ত মহম্মদ লেনের বাড়িতে সকলের সঙ্গে তার অগলাপ করাতে গিয়েছিলেন প্রণয় সাতাশ-আটাশ বছর আগে । দেশস্ত মহম্মদ লেনের আথেtভাঙা গলির গয়ানাথবাবুর বাড়িতে তারপরেও দু-তিনবার গিয়েছিল নিশীথ । গয়ানাথবাবুর মৃত্যুর পর সে বাড়িতে আর যায় নি সে । একুশ কাঠা জমির ওপর বালিগঞ্জ প্লেসের এই অনির্বচন বাড়ি যে দোস্ত মহম্মদ লেনের গয়ানাথের ছেলেরা একদিন সম্ভব করে তুলবে এমন দুঃস্বপ্ন গয়ানাথের ধারণার ত্রিসীমানায়ও কোনোদিন ছিল না । কিন্তু তা তো হল । গয়ানাথ বেঁচে থাকতে হল না । সেটা হলে খুব খুশি হত নিশীথ । গয়ানাথবাবু তার স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় ঝালিয়ে দিয়েছিলেন নিশীথের ; তার মেয়েদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন, তার ছেলেদের সঙ্গেও । গয়ানাথবাবুর স্ত্রী স্বামীর আগেই মারা যান, মেয়েদের কথা বিশেষ কিছু মনে নেই নিশীথের, ছেলেদের প্রকোপ এখনো কিছু-কিছু চোখে পড়ে ; জয়নাথ, অজয়নাথ, বিজয়নাথ, সুজয়নাথ—এই চার ছেলেই তো গয়ানাথের । না আর-কেউ আছে ? আপনার বাবা গয়ানাথবাবুর সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল।’ জয়নাথ চুরুটের মোট ছাইট ঝেড়ে ফেলে দিল । চুরুট নিভে যায় নি, জ্বলছে । ‘তা শুনেছি অণমি’— শুনেছে শুধু ? চোখে দেখে নি ? চোখে দেখা জিনিস মনে নেই জয়নাথবাবুর ? “আণপনারা তখন দেশস্ত মহম্মদ লেনের একটা বাড়িতে ছিলেন ।” ও-সব পুরনো কথা শুনতে ভাল লাগে না জয়নাথের । চার ভাইয়ে মিলে তারা Հե >