পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘তা হতে পারেন। সেন্টাল গভর্নমেণ্টে যেতে পারেন।' ‘কে পাচ্ছে ঘোষকে ? তাকে আমি পাব কী করে ? ‘মোহিত ঘোষকে বলে দেখতে পারেন ।” ‘কে মোহিতা ঘোষ ? ‘জানেন না ? ঘোষের স্ত্রী !’ নিশীথের হাতে সিগারেট জ্বলে যাচ্ছিল, একটু ঝাকি দিয়ে ছাই ঝেড়ে ফেলে বললে, ‘অনেক ওপরের লোক তো ঐরা । এঁদের নাগল পাওয়ার সাধ্যি আগমণর নেই ।” জয়নাথের এখন নিতান্তই এটা-ওটার দরকার—তামাকের ধোঁয়ায় সুটকি মাছের গন্ধ পাচ্ছে সে । জয়নাথ কয়েকবার জোরে শুষে চুরুটটা টেনে নিয়ে রাশি-রাশি ধোয়া ছাড়তেছাড়তে বললে, ‘প্রফেসর ঘোষের চেয়ে মোহিতা ঢের কঠিন । কিন্তু কেউ-কেউ তাকে বেশ হাত করে নিতে পারে । ওদের বাড়িতে নৃপেন বলে একটা ছেণকরণ থাকে। শুনেছি তার সঙ্গে মোহিতার কী সব অদ্ভুত সম্বন্ধ । জয়নাথ একটু চোখ টিপে, হেসে, মুখ ভার করে, চুরুট টানতে গিয়ে চুরুটট। নামিয়ে, কেমন নিঃশব্দ মাংসলোলুপ মুখে বসে রইল । ‘কে বলেছে, কোথায় শুনলেন এ কথা জয়নাথবাবু ? নিশীথ তার পাঞ্জাবির গলার বোতামটা খুলতে আর-একটা বোতামও খুলে ফেলল । “আণপনি তো কলকাতায় থাকেন না । কী করে জগনবেন । অণমরা কেউ কেউ জানতে পারি সব ।” so এইবার জয়নাথ উঠবে হয় তো । নাকি আরো গেড়ে বসবে । কিন্তু নিশীথকে উঠতে হবে বোধ হয় । জয়নাথের এখন অন্য নানা রকম আয়োজনের সময় এসে পড়েছে । ধরাছোয়ার ভেতরে কিছু নেই যেন চারদিকের আবহাওয়ার ভেতর, কিন্তু তবুও ধোয়াটা কেমন ফলাও করে পেকে উঠছে জয়নাথের চুরুটে । রাত বাড়ছে । ধোয়া পাকছে। একটা চুরুট চেয়ে নিলে হত জয়নাথের কাছ থেকে । চাকরি সে নিশীথকে কিছুতেই দেবে না, প্রফেসর ঘোষ বা মহিলাদের কাউকে সঙ্গে করে এনে তাকে দিয়ে জয়নাথকে বেশ ভাল করে মকরধ্বজ না মাড়িয়ে দিলে । খুব সম্ভব চেষ্টা করলে মিসেস ঘোষকে আনা যায় এ বাড়িতে নিশীথের কাজের সুরাহ করে দেবার জন্যে ? FRSbr