পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“অবনী খাস্তগির কে ?’ “নাম শোনো নি ? অনেক দিন তো দেশ ছাড়া ! অবনীবাবুর কলকাতায় বাড়ি আছে, ভুবনেশ্বরে আছে, রাচিতে আছে, জামতাড়ায় আছে। পরিবারের লোকজন ওঁর সবই কলকাতায়, রাচিতে, জামতাড়ায় আর ভুবনেশ্বরে। উনি নিজেও কলকাতায়ই থাকেন, এখানে মাঝে-মাঝে আট-দশ দিনের জন্যে এসে নেতাগিরি করে যান। সবাইকে আশ্বাস দেন, ভয়ের কিছু নেই বলেন, স্বাধীনতার সদ্ব্যবহার করবার উপদেশ দেন—সত্য পথে চলে, শান্ত অহিংস হয়ে, নিভীক মনে, সকলেরই যাতে উপকার হয় সকলকেই সে দিকে দৃষ্টি রেখে চলতে বলেন । ঘর-বাড়ি ছেড়ে কলকাতায় বা ইণ্ডিয়ান ইউনিয়নে সরে যেতে দু-হাত তুলে নিষেধ করছেন সবাইকে অবনী খাস্তগির । সঙ্গে ওঁর সেক্রেটারি আছে । রোজই প্রায় খাস্তগিরের বিবৃতি পাঠানো হচ্ছে কলকাতার প্রেসে, প্রাণ ভরে ছাপাচ্ছেও তো প্রেস, সুলেখা হাসতে-হাসতে বললে, কেন ছাপাচ্ছে হরীত ?’ ‘ভাল কথাই তো বলছে খাস্তগির, কেন ছাপবে না ? ‘ভাল কথাই বটে হরীত ! সুলেখা চিলেকোঠায় ঢুকে একটা বেতের চেয়ার হারীতকে এগিয়ে দিয়ে বললে, “ভাল কথা হলে উনি নিজে থাকেন না কেন এখানে ? দু-চারটে বোলচাল ঝেড়ে অণট-দশ দিনেই তো হয়ে যায় থাস্তগিরের । কেন এ রকম ? কেন এ রকম হরীত ? হারীত চেয়ারে বসে বললে, “ওদের কথা নিয়ে তুমি এত মাথা ঘামাও কেন ? ওদের ওপর নির্ভর করলে কি আমাদের চলে ? জুলেখা কি খাস্তগিরের ওখানে গেছে ? ‘কাদের ওপর নির্ভর করতে হবে ? ‘আগমণদের নিজেদের ওপর ।’ একটা কাঠের চেয়ার টেনে জানালার কাছে বসল সুলেখা । চিলেকোঠা এর নাম বটে কিন্তু ছাদের ওপরে এই ঘরটা বেশ বড়, আলো হাওয়ায় ভরপুর, আকাশের কাছে যেন । বেণশেখ আকাশের চিলের মত, খণ্ড নীল সাদা মেঘের .ভেতরে হরিণীত এসে পড়েছে, যেন সময়ের আরো কাছে এসে পড়েছে ।

  • জলপাইহাটির ছোট-ছোট কাজগুলো শেষ করে নিতে তোমার বছরখানেক

লাগবে ?"