পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

'কাটাচ্ছি তো । সুলেখার মুখ খুঁজে নিয়ে সেদিকে তাকিয়ে হারাত বললে । এ রকম করেই রক্তবিপ্লব করবে তুমি হারাত ? এ রকম একটা প্রশ্ন তুলে হারীতকে যে জব্দ করে দেওয়া যায় সে খেয়ালটার বিশেষ কোনো মূল্য রইল না হঠাৎ যেন সুলেখার কাছে, নিমেষে মুছে গেল তার মনের ভিতর থেকে, চারদিকের পৃথিবীর থেকে নির্লিপ্ত হয়ে রইল এর চোখ ওর চোখকে বিষয়াসক্তির জিনিস বলে মনে করে আধ মিনিট, এক মিনিট, দেড় মিনিট— সানগ্লাস খুলে ফেলল সুলেখা, টেবিলের কেসে আটকে রেখে এল । ‘রোদ সরে গেছে এখান থেকে হরীত । বাইরে কেমন ? ‘খুব ঝাঝ বাইরে।’ “ঘরের ভেতরটা এখন ঠাণ্ডা ।” 'জুলেখারণ বাজি রেখে বসে খেলছে বুঝি ? ই্যা । বেশ কড়কে জুয়ো না খেললে ভাল লাগে কি এমন দুপুরে । একটা মোট নেশা চাই তো, বিকেলে চা খেয়ে মহড়া দেবে সকলে মিলে । আজি বিকেলে মিটিঙ তো হবে । রোজই তো হচ্ছে । যাও না তুমি ? মিটিঙে কে কী বলবে, কী বলা উচিত, তার আলোচনা চলবে চায়ের বৈঠকে ।’ ‘কোথায় হবে মিটিঙ ?’ ‘মহম্মদ মতিজেদ হলে।’ যাবে নাকি সুলেখা ? ‘ইচ্ছে করে না মিটিঙে যেতে আমার । খাস্তগির মশাই তো ডামাডোল করে আগমণদের এখানে থাকতে বলে চার-পাচ দিন পরেই সস্ত্রীক কলকাতায় চলে যাবেন, সুবিধে বুঝে ফিরবেন হয় তো আবার ন-মাস ছ-মাস পরে ; না হলে ফেরবার দরকার নেই। এ সব লোকের মিটিঙ তো চেচিয়ে কথা বলা । অনায়াসেই বলে যায় কিছু তেজী, কিছু ভগরিকে, ডারডেলণর কত কথা সব । কিন্তু শুধু কথা বললে তো হয় না—চরিত্র কোথায় ? ‘অবনী খাস্তগিরের স্ত্রীও বলবেন নাকি ?’ ‘জানি না, ওয়াজেদ আলি সাহেব হয় তো বলবেন । খাস্তগিরের চেয়ে বেশি জিনিস আপছে জনাব ওয়াজেদ আলির ভেতর।’ I হারােত চোখ বুজে সায় দিয়ে, চোখ মেলতে, হুড়হুড় করে বেশি বাতাস ঘরের ভেতর ঢুকে পড়তেই, চোখ বুজে-বুজে বললে, "কী করে আলাপ হল ওয়াজেদ סאס