পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃষ্ণচুড়ার দিকে । খারাপ ভাবটা কেটে যাচ্ছে—চোখ বুজে আসছে তার, মনের ওপর শরীরেই যেন বেশি ভাল লাগ তর্কাতীত তার । ‘তুমি গগলস পরছ না হরীত ? ‘না । এখন অীর দরকার নেই ।” সূর্যের আঁচ খুব ভাল লাগে তোমার । স্কাইলাইটের ভেতর থেকে রোদ আগসছে এবার—’ একটা পুরু মেঘের নীচে চাপা পড়েছে সূর্য । নীচের মেঘের ওপরে আরএকটা পাতলা মেঘ ছড়ানো রয়েছে তোমার এই চশমার রঙের মত । ‘কী করে টের পেলে তুমি ? জানাল দিয়ে দেখা যাচ্ছে না তো ' ‘জানালার ভেতর দিয়ে সাদা মেঘের পাকিস্তানের দিকটাকে দেখা যাচ্ছে, ইণ্ডিয়ান ইউনিয়নের দিকটা ছাদের ওপরে, হরীত বললে । ‘ইউনিয়নকে ছায়ণয় ঘিরেছে ? ‘বৃষ্টি হবে মনে হচ্ছে।’ এক টুকরোও কালে মেঘ নেই তো আকাশে । গুমোট নেই। নীল আকাশ থেকে বাতাস লাফিয়ে-লাফিয়ে বেশি নীল, বেশি মধুর করে ফেলছে যেন সব । কী করে বৃষ্টি হয়, সুলেখা বলতে-বলতে চোখ বুজে কথা বলা শেষ করল । ‘আজ হবে না বৃষ্টি। অবনী খাস্তগিরের মিটঙও তো রয়েছে। ‘আকাশ যদি কালো করে আসে সেটা ভাল লাগে, কিন্তু এখন নয়।’

  • কেন এখন নয় ?” ‘এখন এই রোদ, বাতাস, ঘন নীলের হরিয়াল ভীমরুলদের নিঝুম দুপুরটাকে ভাল লাগছে আমার । ক্যানাফুলদের দুপুর এমন আশ্চর্ঘ নিরালা—এখন যদি ডেকে ওঠেন তিনি—’
  • लिनि ?’

‘অগর কে ? যিনি কালো মেঘ ফণটিয়ে কথা বলেন—’ ‘ডাকবেন না । আগজ ওয়াজেদ আগলি সাহেবের কথা বলবণর কথা । হারীতের কথাটা কানে গেল না যেন সুলেখার । সে অন্যমনস্ক হয়ে অনেক দূরের একরাশি জলের দিকে তাকিয়েছিল । উচু-উচু গাছের ফঁাকের ভেতর দিয়ে দেখা যাচ্ছে—বাতাসে-বাতাসে ছুটে চলেছে জলগুলো, কোনোদিন যেন শেষ হবে না এমনি একটা শাশ্বত ইশারীর ঝিলিক, কোনোদিন যেন নিভে ৩২৬