পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কি স্বাস্থ্যেরও ব্যতিক্রম নয় ? বিশৃঙ্খলা তো খুব । কেমন শরীর ভেঙে পড়েছে হারীতের ; নিশীথবাবুর চেয়েও বয়স্ক দেখায় যেন হরীতকে আচমকা তাকিয়ে দেখলে, নিশীথবাবুর দাদার মত মনে হয় প্রৌঢ়তায়, জীর্ণতায় । অথচ চারু বছর আগে কী আশ্চর্য চেহারা ছিল হগরীতের । ‘এই সব অনিয়মে শরীরটা খারাপ হয়ে পড়েছে তোমার ।’ ‘এখন ভাল হবে ।’ ‘কলকাতায় মদও খেতে তুমি ? ‘কে বলেছে ?” সুলেখা হেসে চিপটেন কেটে বললে, সব কথাই তো আমাকে ওয়াজেদ আলি সাহেবের বলে । কিন্তু এটা বলে নি ।’ ‘মদ খাব ভাবছিলাম কলকাতায়, কিন্তু পয়সায় কুলল না। ইকবালের হিন্দুস্থান হামার, সারে জর্ণহাসে অস্থিা হিন্দুস্তান হামারা গানটা বেশ একটা নাম করা পড়ার মেয়ে গাইছিল, রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে-যেতে শুনেছিলাম। পয়সা ছিল না বলে বাড়িতে ঢুকে সে মেয়েটার সঙ্গে রাত কাটাতে পারলাম না । ‘খুব ইচ্ছে করছিল ? ‘গানটা গাইতে পার তুমি ? লক্ষেীর মুসলমানিদের মত পারি না, সুলেখা নিজের অন্তর্কর্ণকে শুনিয়ে গানটা গাইবার চেষ্টা করতে-করতে একবার হারাতের দিকে মুখ তুলে তাকিয়ে বললে, এখানে গল ছেড়ে গাইতে হলে হিন্দুস্তানের জায়গায় পাকিস্তান বলতে হবে ।’ হার্যত কুড়েমি ভাঙতে-ভাঙতে বললে, ‘গানটা লিখেছেন তো পাকিস্তানের কবিগুরু ইকবাল, তিনি কী বুঝে হিন্দুস্তান লিখেছেন তিনিই জানেন, তুমি জনাব ওয়াজেদ আগলি সাহেবকে ন জিজ্ঞেস করে পাকিস্তান করে দিও না ।” সুলেখা গুনগুন করে অন্য একটা উদ্বু গানের সুর ভঁাজতে-ভঁজতে থেমে গেল । ‘বসে তুমি, চা করে আনছি।” ‘তুমি খাও। আমি এখন খাব না । তিনটে সাড়ে তিনটের সময় তো ভাত খেতে হবে । এমনিই ক্ষিদে কম । চা খেলে ক্ষিদে একেবারে মরে যাবে। কত বাকি তিনটে বা জবার বলতে পার ? ‘নীচের বড় ঘড়িটা তো বন্ধ হয়ে আছে । হাতঘড়ি দুটো ওরা নিয়ে গেছে । ৩৩১