পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিজের ব্যক্তিজীবনের মূর্খতায়, আর মহাজনদের কৃতঘ্নতায় যারা পথ খুঁজে পাচ্ছে না, তাদের যেতে হয় কলকাতায় ? তারা এখানে ফিরে আসুক, এখানে ফিরে আসুক ; উপলব্ধি, বেশি উপলব্ধি বেশি নিপ্রিয়তা, কেমন একটা নিষ্কাম স্বস্তিকামনার হাতে আত্মদান, খানিকটা শাস্তি—এই সব সাধ সিদ্ধির জন্যেই তো নির্মিত তাদের জীবন । কোথায় পাবে এ সব কলকাতায় নিশীথ সেন ? কী করছে সেখানে সে ? খুব সম্ভব ভাল নেই। নাকি ভাল আছে ? কাজ পেয়েছে এবং কোনো মহিলাকে ? বাবাকে চেনে নি বুঝি হারাত ? কপাল ফুড়ে হঠাৎ আর-একটা চোখ বেরিয়ে পড়তে পারে এ রকম একটা প্রচ্ছন্ন আভাস নিয়ে-নিয়ে নিশীথ সেন যেন সব সময়ই ঘুরে বেড়াত ঃ নিম আণর জামবনের দিকে তাকিয়ে-তাকিয়ে ভাবছিল হরীত। সুলেখাকে বলে এসেছে হারীত, সে একটু চামারপটির দিকে যাবে সাহাদের ওখান থেকে কিছু চালের জোগাড় করবণর জন্যে । যেতে ইচ্ছে করছে না আগজ ; শরীরটা ভাল নেই । ভাল নেই ? কিন্তু গত তিন বছরের ভেতর কবে ভাল ছিল শরীর ? এই প্রণয় টি-বি রুগির মত শরীর নিয়ে কত দুর্দশস্ত কাজ সে করেছে । যাবে চামারপটিতে সে, আগে বিরাজ সাহার কাছে যাবে, জোগাড় করে নেবে চাল ডালের । একটু রাত হবে যেতে। বেশি বেলায় বাসি জিনিসগুলো খেয়ে কেমন যেন অম্বল হয়েছে হারতের । ঢেঁকুর তুলছিল । পিওন পেয়াদাপে-কমিশন মাস্টারদের সম্বন্ধে যা বলেছে সুলেখা সেটা কেমন হিংস্র বাঘিনীর মত লাফিয়ে উঠে বলেছে, অথচ সুলেখাকে বিপ্লব করতে বললে কংগ্রেসের শান্তি অণর সংহতির ভেতর গা-ঢাকা দিয়ে হারিয়ে যাবে সে । মিথ্যে কথা বলে নি সুলেখা, কিন্তু সত্যি কাজ করবে কি সে ? ‘উনি চিঠি লিখছেন না কেন হরীত ?’ ‘তোড়জোড় করছেন । ‘কী বলছ বুঝছি না।’ ‘কোথায় আছেন কলকাতায় ? একটা ঢেকুর তুলে জিজ্ঞেস করল হারৗত । ‘বলেছিলেন তো জিতেন দাশগুপ্তের ওখানে থাকবেন কিছু দিন । গিয়ে একটা পৌছ-সংবাদ দেওয়া উচিত ছিল না ? কী হল, কলকাতায় যেতে পারলেন কী না ? হারীত বললে, “কলকাতা ছাড়া এ গাড়ি বেশি জিরোয় না কোথাও । বেশি না ৩৩৮