পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুমনা ক্লান্ত হয়ে বললে, “আমার টাকাটা আমাকে ফিরিয়ে দাও।” ‘আমার বাক্সে আছে ; এক্ষুনি দেব ? "হ্যা । এখনই ।” টাকা হাতে নিয়ে, সোয়াশ টাকা গুনে, নোটগুলো আঁচলের খুঁটে বাধতে-বাধতে সুমন বললে, ‘তুমি নাকি ডাক্তার মজুমদারের কাছে কী একটা রফা করতে গিয়েছিলে ?’ ‘কে বলেছে তোমাকে ?’ ‘কানে অণসে । নরেন বলছিল ।” ‘কোন নরেন ? নরেন মিত্তির ?’ সুমনা মাথা নেড়ে বললে, ‘হঁ্যা ।” ‘নরেন অণবীর এখানে এসেছিল । এত বড় পায়ণ বেড়েছে তার ।” ‘কেন আণসবে না ? অামাকে যে-রক্ত দিয়ে ঋণে বেঁধে রেখেছে । অণমার পেটের সন্তানরা যা করে নি আমার জন্যে, সে তা করেছে । কী করছ তোমরা আমার জন্যে, পেটের ছেলেমেয়েরা ? কী করছ তোমার বাবার জন্যে, তিনি তো কলকাতায় খুবড়ি খেয়ে একশেষ হচ্ছেন । নরেনের মত ছেলে থাকলে ও-র কম হত তার ? অম্বলই হয়েছে হারতের, পেট জ্বলছিল, বুক জ্বলছিল, গলা জ্বলছিল। ডাল খাওয়াটা উচিত হয় নি, বেশি খেয়ে ফেলেছে, উচ্ছের তরকারিটায় একটু ঝাল ছিল । নিজেই তো রেধে গিয়েছে তরকারিট সকালবেলা । কেন ঝাল দিতে গেল হরীত ? নাকি, অর্চনা এক ফঁাকে এসে ঝাল মিশিয়ে গেছে রান্নায় ? ‘কী বলেছে নরেন ?? ‘ষা বলবার তাই বলেছে, সুমন বললে, ‘আগেই শুধোই তোমাকে, কেন নরেনের রক্ত নিচ্ছ না ?’ হরিণীত একটু অবাক হয়ে বললে, ‘কেন, রক্ত দেবার কথা বলছিল নাকি ? রক্ত দিতে চাচ্ছে ? সেধে দিতে চাচ্ছে ?” ‘ত| চাচ্ছেই তো । কেন চাইবে না । সে তো দিচ্ছিল । তোমার বাবা ঠিক করে গেছলেন । আমার উপকার হচ্ছিল । তুমি বদলাবার কে হরীত ? হার্যত সুমনার দিকে তাকিয়ে বললে, উপকার হচ্ছিল ? এখন যে দিচ্ছে তার রক্তে কোনো জোশ নেই মনে হচ্ছে তোমার ? উপকার বোধ করছ না ? Ծ8Տ