পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘দু-দফা ছিল । এক হচ্ছে নরেনের রক্ত নিতে হবে—’ ‘চাদ মিঞাও তা চায় ? কেমন একটু কৌতুক বোধ করে বললে হরীত । ‘চীদ মিঞা, গনি,ইসমাইল, সুজন খা সব্বাই তাই চায় । ‘কেন, এতে তাদের কী স্বাৰ্থ ? হারাত কোনো কিনার না পেয়ে সুমনার ডান হাতের মুঠোর দিকে তেরছা চোখে তাকিয়ে থেকে বললে । নরেন, বরেন, চাদ মিঞা, বরকত আলি, সুজন খ, গনি ওদের একটা দল তো। নরেনের কোনো অমান্ত্যি হলে ওদেরও অমান্ত্যি, দোলো ব্যাপার ; এত দিন। পলিটিক্সে থেকে সে তোমার বোঝা উচিত ছিল হরীত । দশের খাতিরে. এসেছিল ওরা সব ।’ ‘রক্ত দেওয়াটা একটা মানের ব্যাপার ; না দিলে অমান্তি হয় ? মানঅপমানের বেশ চেকনাই বেরুচ্ছে নরেনের—সুজন খা, চাঁদ মিঞা, আশু দত্ত, নিমাই হালদারদের সঙ্গে মিশে ।’ ‘মেলা চেচিও না হরীত । আগের সে দেশ-গণ নেই, কিন্তু লোক বদলেছে, হাওয়া বদলেছে । তুমি শত্রু বানাচ্ছ খুব হরীত । ‘বানাচ্ছি, তা তো দেখছিই। কী করতে হবে ? যা ভাল বুঝি তাই তো করি । কারু সাতে-পাচে অনিষ্টে থাকি না । মানুযের ইষ্ট করতে চেষ্টা করছি, দু জগতের মানুষেরই । আমাকে নাকে ধরে ঘুরিয়ে দেখাবে নাকি নরেন, আশু দত্ত, চাদ মিঞা, সুজন খা ? ‘আঃ, কী করছিস, ঝামেলা কেন করছিস হারীত । ওদের আক্রোশ, তুই জুলেখাকে হাত করতে চেষ্টা করছিস । কেন করছিস ? কী দরকার তোর ? আমার গা-টুয়ে বল, যাবি না আর জুলেখাদের ওখানে । ‘কেন যাবে না জুলেখাদের ওখানে হরীত ? বললে অৰ্চনা ; এই মাত্র কখন ঘরের ভেতর ঢুকে পড়েছে অৰ্চনা টের পায় নি হারৗত । সে বাইরের পৃথিবীর দিকে তাকিয়েছিল, দেখছিল, খুঁজছিল খুব উচু শিমূল গাছটার হাজার-হাজার বাতাসি পাতারাশির ভেতর থেকে সেই উড়ন্ত বুলবুলি দুটোকে ; নেই এদিকে তারা ; কোথায় চলে গেছে ; জামরুল বনের ভেতর দিয়ে ওড়া একটা মাছরাঙা যদি রেডিওতে পাখির স্বর নেওয়া হত, তেমন একটা তালের সুস্থতা দিয়ে শুরু করে, সমস্ত মেশিনের এরিয়ালের অতীত কী একটা প্রাকৃতিক নিবিড় শবেদর অনন্তের ভেতর দিয়ে কোথায় মিলিয়ে গেল । Ꮼ8Ꮔy