পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাজের ধাধায় ঘুরতে-ঘুরতে থার্মোমিটার জিভে সঁাটাবার ফিকিরটা কী তোমার হারীত ? ‘দেখে নিই টুক করে !" হরীত অল্পে সেরে দিয়ে বললে, ‘পরশু জ্বর হয় নি । পরশু রাতে বাড়ি ছিলুম আমি । হরিণীত একটু ভেবে বললে, ‘বাবাকে লিখে দিতে পার ; তোমার ছেলের শরীর মেরামত করে দিচ্ছি অগমি’—অর্চনার দিকে তাকিয়ে হরীত বললে, কিন্তু কোনো ভেলকি না ঘটলে বাবাকে তে। তুমি চিঠি লিখবে না ; এ চেন্নারে তো বাবার বসবণর কথা ছিল, আমি বসে তোমার সঙ্গে কথা বলছি এর চেয়েও বড় ভানুমতীর খেলা চাও তুমি ? বলে হগরীতের মনে হল অপূর্ণ কথা বলেছে সে, কথাটাকে সম্পূর্ণ করে দে ওয়া উচিত ছিল । অৰ্চনা হারাতের থেকে তিন-চার বছরেরই বড় নয় শুধু, এক শতাব্দীর বড় যেন ; কী করে সে তৃপ্ত হবে সম্পূর্ণ জিনিস ছাড়া ? কিন্তু তবুও যে-কথাটা বলেছে সে, সেটাকে চাপা না দিয়ে অৰ্চনার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল, কী বলে সে তাই শুনবার জন্যে । তাকতে-তাকাতে হারীতের মনে হল ভেঙে যায়, বদলে যায়, নতুন হয়ে ওঠে সব, অর্চনার চেয়ে হরীত নিজেই বড় যেন ; হয় তো এক শতকেরই ; দিদিমার মত মনে হয়েছিল অর্চনাকে এক সময়, তার পর মাসির মত, বোনের মত, তার পর কেমন নাতনির মত মনে হচ্ছে, শিশুর মত তাকিয়ে আছে, থই পাচ্ছে না যেন পৃথিবীতে, কী ভয়াবহ সরল দৃষ্টিতে সুমনার দিকে একবার, হারাতের দিকে একবার, তাকিয়ে দেখছে । মনটাকে ঝগড়া দিয়ে বাস্তব পৃথিবীতে হরীত ফিরে এল ; ঠিক আছে ; অর্চনা ঠিকই আছে । দিদিমা, মাসিম, নাতনি নয়—নিজের প্রতিভা ফিরে পেয়েছে অৰ্চনার মুখ, দৃষ্টি, আঁচল, কাল বেণীর খোপা তার । ‘আমি চেয়েছিলুম তুমি বরাবর এখানে থাকবে । *বরাবর ? আমার কলকাতার বিপ্লবের কাজগুলো কে করবে তা হলে ?’

  • কলকাতায় গিয়ে বিপ্লব করবার কোনো দরকার নেই তোমার ।"
  • কেন ?? *ও-সব জিনিসে কিছু হয় না কোনোদিন । বুখারিন, বরোডিন, কামেনেভ, রাইকভ তো মাঝপথে সরে গেল । স্ট্যালিন শেষ পর্যন্ত রইল, কিন্তু আমেরিকা বোমা দিয়ে সমস্ত রাশিয়া শেষ করে ফেলবে, না, রাশিয়া সমস্ত আমেরিকাটাকে

•4S)&No