পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উৎখাত করে দেবে এতেই এসে দাড়াল তো সব বিপ্লব । ওতে নেই, কিছু নেই।” হারীত শার্টের পকেট থেকে নোটগুলো বের করে খাটের তোশকের নীচে ঠেলে দিতে-দিতে বললে, ‘পলিটিকসের কথা বলে না তুমি । ও-সব তোমার মুখে শুনতে চাই না । সমস্ত পলিটিকসের থেকে তোমাদের কাছে আসি, ওরা যা পারে না, তুমি তাই দিতে পার বলে। তুমি তা দিতে পার বলে বরাবর জলপাইহাটতে থাকব আমি ।’ হারাত দরজার ভেতর দিয়ে বাইরের দিকে চোখের স্নায়ুগুলোকে একবার ঘুরিয়ে এনে ঘরের ভেতরে ছেড়ে দিল, স্নায়ুর অতীত দৃষ্টির আলোর ভেতর । ‘বাবা অfর ফিরে আসবেন না জলপাইহণটিতে । "এ কলেজে তিনি অণর কাজ করবেন না । আসতে পারেন তোমার মাকে নিয়ে যেতে । কলকাতায় চলে যাবার সময় আমাকে বলেছিলেন, সুমনাদি যদি মারা যান তা হলে শ্রাদ্ধশান্তি করতে এখানে ফিরতেও পারেন তিনি, নাও পারেন । ” অণকাশের একরণজি শান্ত নক্ষত্রের দিকে তাকিয়ে হরীত বললে, “আশ্চর্য, আমি দেখেছি তো, তোমরা পরস্পরকে কী রকম শ্রদ্ধা করতে । তার পরে কী করে এক জনকে ফেলে আগর-একজন এ রকম ভাবে চলে যায় । বাবা তো তুখোড় রসিক মানুষ, জ্ঞানীও, জ্ঞানপাপীও—বোকা তো নয়, স্থল ওঁচা রক্তাক্ত তো নয়—একটা আধা ভুয়ো বিপ্লবীর মত আশ্চর্য, ফিরবেন না আর ?

  • म'| ।।' ‘তুমিও যাবে না, মহিমবাবু যদি কলকাতায় চাকরি পান তা হলে নিশীথবাবুর সঙ্গে দেখা করতে ? ই্যা, সোম গ্রহে মানুষ যদি থাকে, তা হলে যেতে হবে সেখানে এক দিন পৃথিবীর মানুষকে । সোম বলছি—আমি মঙ্গল বলতে চাইছিলুম হরীত । হারীত আকাশের তারাগুলোর দিকেই তাকিয়েছিল, একটু হেসে কোথায় মঙ্গল তারাটি আছে আস্তে-অস্তে চোখ ঘুরিয়ে খুঁজে নেবার চেষ্টা করছিল এমনিই । কিন্তু জগনগলা-দরজা দিয়ে যে-খণ্ড আকাশ দেখা যায় তাতে সে গ্রহ খুঁজে পাওয়া গেল না ।

‘বাবা ফিরে আসবেন এ দেশে ।’ ‘কে বললে ?’