পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘মাকে চিনেছি জুলেখা । কিন্তু চোদ-পনেরতে এই মাকে তো পাওয়। উচিত ছিল আমার । এখন বয়স আমার ত্রিশের কাছাকাছি, অচনারও কাছাকাছি ত্রিশের, কী করে পাব আমি অচনাকে ?’ শুনে কোনো কথা বললে না জুলেখা । কথা বলবার কোনো আয়োজন নেই তার হৃদয়ে—কেমন একটা অস্পষ্ট ঝেণক লেগে ছিল জুলেখার মুখে— স্বাভাবিক হয়ে গেছে চোখমুখ—বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। *আমাকে পথ দেখিয়ে দিতে হবে, হরীত বললে । “আমার হাতে কোনো পথ নেই।' *পাকিস্তানে আমার এক বছর থাকার কথা ছিল । আচfনা বলেছিল আরো অনেক দিন থাকতে । কিন্তু ইউনিয়নে যাদের আমি জড়ো করেছিলাম তারা তো ছিটকে পড়বে চার দিকে, আমি এত দিন এখানে পড়ে থাকলে । আমার জীবনের সবচেয়ে বড় কাজ ইণ্ডিয়ান ইউনিয়নে । সেখানে গিয়ে—দশ-পনের বছর পরে সফল হলেও—এখন থেকেই কাজকর্মের আয়োজন করতে হবে আগমণকে ৷” ‘তা হবে । কিন্তু নিশীথবাবু সরে যেতে না যেতেই যা ফেদেছ তোমরা দু-জন—আগে তার মীমাংসা না হলে কী করে বিপ্লব করবে তুমি ।’ ‘আমার বিপ্লবে আসবে তুমি ? ‘কোথায় ? ইউনিয়নে ? না, আমি এখানকার মানুষ, আমি কোনো বড় রেভলুশনের প্রয়োজন দেখছি না এখন, কংগ্রেসও তা চাচ্ছে না।’ ‘আমি কমু্যনিস্ট নই।" ‘জানি, কিন্তু আমি কংগ্রেসের। কোনো মরণান্ত রেভলুশনের দরকার দেখছি না আমরা ।” ‘কংগ্রেস তো পাকিস্তানে থাকছে না ?” ‘তাই বলে ইউনিয়নে গিয়ে আমি তোমার সঙ্গে বিপ্লব করব ? কেন, ও-দেশে চিড়ে খেতে কালীঠাকুরের দল ছাড়া আর কেউ নেই ? একটু নিশ্বাস নিয়ে জুলেখা বললে, ‘তুমি ইউনিয়নে গিয়ে রেভলুশন করছ, আর এখানে জলপাইহাটিতে এসে যা তোমার দরকার নয়, যে-জিনিস তোমার বাবা পর্যন্ত ভয় করতেন তার ভেতর জড়িয়ে পড়ছ। তোমার মাকে চিনেছ তুমি হারীত ' \Dys