পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৪১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কল্যাণী বললে, ‘প্রমথদণ বড় একটা যায় না কোথাও ; দেখুন না, নিতান্ত নিজের বিয়ে, তাই রাজশাহি অবিদ যেতে হবে সশরীরে ; কিন্তু বদলে যদি কাউকে দিয়ে কাজ চালানো যেত তা হলে এখান থেকে এক পাও নড়াতে পারতেন না প্রমথদাকে ; দেখুন এও শেষ পর্যন্ত যায় কি না । শুভেন্দু হো হো করে হেসে উঠছে । আমোদ পেয়ে বলছে, ‘ও, সেই জন্য বুঝি যায় নি সুরমাদির বিয়েতে— প্রবলভাবে ঘাড় নেড়ে বললে, “কিন্তু, আমি কিন্তু বাবা বিয়েঅগচা কভি নেই ছোরেঙ্গে। একেই তো নানা ঝঞ্জাটে মানুষের দুর্বিষহ জীবন, তার পর এই মুহূর্তগুলো, ভাই, বিয়েই হোক বা শ্ৰাদ্ধই হোক, জন্মদিন অন্নপ্রাশন চূড়োকরণ যাই হোক না কেন, আসবি তো বাবা চটপট এসে পড়, না সেই ঢিমিয়েটিমিয়ে-ঢিমিয়ে—তাও যদি প্রতিটিতে নেমন্তন্ন চিঠি পাওয়া যেত ; এও এক বিভ্ৰাট—’ প্রমথর দিকে তাকিয়ে, ‘বড় দয়া করেই আগমণকে শ্রীহস্তে কিছু লিখে দিয়েছিল ভাই প্রমথ, শুভবিবাহের ফর্ম্যাল চিঠি পেলেই আমি যেন চলে আসি— হঠাৎ ( কল্যাণীর কাছে ) নিজের অতিরিক্ত বাচালতা আণবিষ্কার করে ফেলে একটু থমকে গিয়ে বললে শুভেন্দু, সুরমাদির কিন্তু আমাকে চিঠি দেন নি।’ কল্যাণী বিস্মিত হয়ে বললে, “সে কী ?’ শুভেন্দু প্রমথর দিকে তাকিয়ে বললে, ‘হ্যা, যা বলছিলাম, সুরমাদির বর আমার পিসতুতো ভাই— প্রমথ বললে, “তোমারই ভাই ?’ —আপন পিসতুতো ; সেই সূত্রেই যাওয়া ; দাদার বিয়ের বরযাত্রী ; যা মজণটাই মেরেছিলাম—জিজ্ঞেস করো কল্যাণীকে—' অতিরিক্ত অন্তরঙ্গতায় কল্যাণী একটু অস্বস্তি বোধ করছিল হয় তো ; কিন্তু তাতে কোনো অসুবিধা হচ্ছিল না তার ; একটু নড়েচড়ে বসে বললে, “আমাকে কেন জিজ্ঞাসা, শুভেন্দুবাবু! আমাদের মেয়েমহলের স্ফূর্তির আপনারাও জানেন নি কিছু, আপনাদেরটাও, দুর্ভাগ্যক্রমে, কিংবা বড় সৌভাগ্যই বলতে হবে, আমরা উপভোগ করতে পারি নি—— —“ঐ তো বুঝলে প্রমথ—শুনলে ? কল্যাণী বলছে আমাদেরটা সম্ভোগ করবার তেমন সৌভাগ্য হয় নি তাদের, তারও হয় নি ; ঠেস দিয়ে কথা বলতে 8Oዊ