পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৪২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধা করিয়া উড়িয়া আসিয়া নারিকেল গাছের গায়ে ছাতকুড়ার উপর বসিল, সিভিল কোর্টের বারীন্দীয় চড়াই লাফাইয়ণ বেড়ায়, অশ্বখের ডালপালায় বেী-কথা-কও, পাপিয়া, মাছরাঙা, দাড়কাক, ফিঙ্গার সমাবেশ ভারী সুন্দর। কত শুকসারীর দলকে ফেলিয়া যাব আমি—তিনশ বছর আগের পুরনো কথা—ও নীলকণিকার দেশ বৃক্ষের ভিতর জাগিয়া ওঠে । যে দিকে তাকাই, হৃদয়কে নরম করিয়া রাখিবণর জন্য জগতে অনেক জিনিসই ८उो ष्ट्रिट्नु । সন্ধার সময় ফিরিয়া আসিয়া ক্ষুধা পাইত বটে ; ইহার ব্যবস্থাও ছিল মন্দ না । হিমাংশুর মা আমাদের জন্য সুজি তৈরি করিয়া রাখিত ; প্রায়ই চিনি কম হইত, কোনোদিন ঘি খুঁজিয়া পাওয়া যাইত না, এক দিনও কিসমিস দিত না । হিমাংশুর মা সুজিই বা কেন রাধে যে রোজ, বুঝিতে পারিতাম না । হাত গড়া রুটি তৈরি করিয়া রাখিলে হয় না ? লাল আটার রুটি আর খানিকটা তরকারি—বেশ জিনিস। এক-আধ দিন লুচি করিলেও তো হয় ; কিন্তু হিমাংশুর মণকে আণমিই বা কী বলিব ? নিজের বিধান সে নিজেই । সে মনে করে মা ও চারু চলিয়া যাইবার পর এই সংসারে সেই একমাত্র নগরী । কথাটা মিথ্যা নয় । আমরা পুরুষ, চুপ করিয়া থাকি তাই । সে চলিয়া গেলে এই সংসারটা হয় তো একেবারে লক্ষ্মীছাড়া হইয়া পড়িবে । কাজেই তাহার নারীধর্মে যাহা ভাল বোঝে তাহকে তাহাই করিতে দেই । শেষ পর্যন্ত বুঝি যে নারী সে খুবই—তাহার একমাত্র অভাব এই যে, সে আনাড়ি । ইহা ক্ষমা করিয়া লওয়া যায়। যতই খারাপ জিনিস কুগ্ৰী করিয়া রাধুক না সে, খুব নিষ্ঠার সঙ্গে আসন পাতে, ভালবাসিয়া পরিবেশন করে, নিজেকে বঞ্চিত করিয়াও আগমণদের খাওয়াইতে চায় সে ; আমাদের সুখ-সুবিধা খুঁজিয়া বেড়ায় ; তাহার হৃদয়ের পরিসর দেখিয়া অবাক হইয়ণ থাকি । পিসিমা এক-আধদিন লুচি, পটলভাজা পাঠাইয়া দেন, কিংবা পাউরুটি টেস্ট, অমলেট— যে-ডিশে এ সব থাবার আসে তাহাও খুব সুন্দর ; খুব সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করি । ভয় হয় পাছে ভাঙিয়া যায় । কচিৎ তিনি নিজের হাতেই খাবার সাজাইয়া লইয়া অণসেন । বলেন, তোমাদের রেকগবিতে সাজাইয়ণ লও । তিনি দগড়াইয়া থাকেন, সাজাইয়া লই, তাহার ডিশ ফেরত দেই—তিনি চলিয়া ՑՏՆ