পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“কিন্তু কী বলছিলেন ?? ‘জিতেন কি কোন দিন বলে নি কিছু এ সম্বন্ধে আপনাকে ?’ 'না' । নিঃশব্দ নিটোল কারসাজিতে ফিকে নীল অজস্ৰ ধেণয়া নাক মুখ দিয়ে বের করতে-করতে মিসেস দাশগুপ্ত বললে । ‘না । বলে নি তো আগমণকে জিতেন ।" নমিত একটু হেসে নিশীথের দিকে তাকাল । বলতে বাধছে আপনার । দেখছি তো । আগচ্ছা জিতেনকে জিজ্ঞেস করব । পি-সি. . .’নমিতা হাসতে-হাসতে বললে, “পি-সি । জিতেনের এলেকার জিনিস কি পি-সি— ‘অনেকটা । জিতেন তো ব্যবসা পাড়ায়ই ঘোরে-ফেরে—ওর কাজ করে, সদাগরি পরামর্শ দেয় । মাড়োয়ারিদের সঙ্গে তো ওর দিনরাত ঠোকাঠুকি । নমিত উঠে দাড়িয়ে কোথেকে একখণ্ড চকখড়ি তুলে নিয়ে কালো টিপয়ের উপর লিখল ঃ O P C A D K S O ‘এই যে টি-পয়ের ওপর কী লিখেছি বলুন তো । ‘আচ্ছা, ত্রিশ বছর আগের পৃথিবীতে ফিরে গিয়ে বলব।’ ‘তার মানে ? ‘সেই চোদ পনের বছরের নিশীথ বলছে, ও পি সি এদিকে এসো ।” ‘মওকণ’ নমিতা হাসতে-হাসতে বলছে, ‘আগচছা, আচচ্ছা জিতেন এলেই ধরব তাকে আমি । আমার ভারী কৌতুহল বোধ হচ্ছে", নমিতার সিগারেটটা ফুরিয়ে গিয়েছিল প্রায় । সেটাকে অ্যাশ-ট্রের ভিতর ফেলে দিয়ে নমিতা বললে, ‘বাসে চড়েন আপনি খুব নিশীথবাবু ? ‘খুব ' ‘জিতেন অঙ্গর আণমি গাড়িতেই বেরুই । অফিস একটা গাড়ি দিয়েছে ওকে ; সব সময়ের জন্যে, অফিসের কাজে অবিশ্যি । সে গাড়িটা আমাদের এখানেই থাকবার কথা । কিন্তু ও একটু বেশি খুঁতখুঁতে, সেটা অফিসেই রেখে দেয় । অফিসে গিয়ে কাজে লাগয় । বাড়ির জন্য একটা অণলণদণ সানবিম কিনেছে । নিশীথ শুনছিল । বেশ আত্মতুষ্টভাবে কথা বলছিল নমিত কিন্তু কথাবার্তায় প্রসাদের স্নিগ্ধতা ততটা ছিল না । কেমন একটা মর্যাদাবোধে ফুলে-ফুলে উঠছিল নমিতার নাকের ফোকা । অণকাশ-বাতাসে স্বাধীনতা ও বেশি টাকার বিশেষ মর্যাদা পান করে খুব ভাল লাগছিল যেন মেয়েটির। ৩২