পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘কটার সময় সুবিধা আপনার ? ‘দেড়টা না পেরুলেই ভাল—” ‘আমি সাড়ে বারটার সময় এসে চীন করব।" ‘আমি পার্কসার্কাসে যাচ্ছি আমাদের গাড়িতে। চলুন আপনাকে নামিয়ে দিয়ে যাই একদগলিয়ায় ?” ‘বালিগঞ্জ স্টেশনে চলুন । পার্কসার্কসে কোথায় যাচ্ছেন ? ‘কাজ আছে সেখানে ; নাম শুনেছেন হয় তো, মুখুজে, সলিল মুখুজ্যে । নমিতা নিশীথের দিকে তাকাল ।

  • ই্যা, জিতেন বলছিল।’

‘যার নাম মা-থিন’ নমিতা তার হাতের সিগারেটটা টিনের ভেতর ঢুকিয়ে রাখতে গেল । এখন খাবে না ; খেতে ইচ্ছে করছে না । ‘মা এখন ওখানে আছে কি না বলতে পারছি না । একটা মুশকিলের ব্যাপার হয়েছে । বাবা বেশ বড় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন ; অবিশ্যি বিলিতি ডিগ্রি নেই ; কিন্তু এদেশে ট্রেনিং নিয়ে তিনি খুব ঝগড়া ওস্তাদ হয়েছিলেন । অনেক, অনেক রোজগার করেছেন, উড়িয়েছেন । এখন আর কিছু করতে পারেন না । প্যারালিসিসের মত হয়েছে । বিছানায়ই পড়ে থাকতে হয় । নামতেও পারেন না । নড়াচড়াও কঠিন, নমিতা উঠে দাড়িয়ে বললে, ‘আমার মা মা-থিন নরওয়েজিয়ান মায়ের মেয়ে। শুনেছেন আপনি ? টিনের ভিতর সিগারেটটা ঢুকিয়ে রেখে ঢাকনি এ'টে দিল । তেপয়ের ওপর রেখে দিল টিনটা । ‘জিতেন তো তাকে মাটিন সাহেব বলে ডাকে । বাবা নাম রেখেছিলেন মার্জারিন অর্থাৎ মার্জারিণী—কিন্তু সংস্কৃতে তো মার্জগরী ? কখনো-কখনো মার্গারিন—মানে আমাদের মাখন— নমিত কথা বলতে-বলতে থেমে গিয়ে জানালার বাইরে অনেক দূরে বিশেষ কোনো কিছুর দিকে না-চেয়ে তবুও এমন ঠায় তাকিয়ে রইল যে মনে হচ্ছিল সমস্ত তাকণবণর ভার গ্রহণ করেছে তার অন্তশ্চক্ষু ; কী প্রতিফলিত হচ্ছে তাতে—নমিতার বাইরের চোখের দিকে তাকিয়ে নিশীথ তার কোনো কিছু কিনারা করে উঠতে পারল না । নিশীথকে আধ খান কথা বলে ছেড়ে দিল নমিত । একটা মুশকিলের ব্যাপার 8O