পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মত, গাই-গোরু দেখার ছলে অবিনশ্বর কৌতুকে অৰ্চি তার দিকে তাকাবার মত লোক এ পৃথিবীতে কেউ নেই—কেউই নেই আর । অচিতাকে ভাল করে বলে দিয়েছে নিশীথ সুমনার কথা ; সুমনকে দেখতে-শুনতে বলে দিয়েছে । “কিন্তু তবুও এ সময়ে তুমি থাকলে ভাল হত নিশীথদণ । ‘আমি তো অগছিই।’ ‘কেন, তুমি কলকাতায় যােচ্ছ শুনলাম ? ‘তোমরা চিঠি লিখলেই চলে আসব। দরকার হলে মহিম যেন টেলিগ্রাম করে—’ ‘বলেছ ওঁকে ?’ ‘বলব ।” “কিন্তু কলকাতায় কেন যগচ্ছ ?”

  • এখানকার কলেজের সঙ্গে বনল না ।”

‘ছুটি নিয়ে যাচ্ছ ? খুব সম্ভব কাজ ছেড়ে দিতে হবে ।’ ছেড়ে দেবে ? তা হলে আমাদের কী হবে ? জলপাইহাটতে সুমনাদি, হারীত—তোমরা থাকবে না অণর !" এর উত্তর কী দেবে নিশীথ ? এতক্ষণ একটা ধূসর গোরুর, হয় তো হরিণীর সান্নিধ্য অনুভব করছিল ; গোরুটা বছরের পর বছর ধূসরতর হয়ে যাবে। নিশীথ অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে ছিল, অৰ্চিতার সঙ্গে কথা বলবার সময় তার মুখের দিকে তাকায় নি। মাঠের উপর শুয়ে আছি ; শুয়ে আছি চোখ বুজে ; কেমন একটা গন্ধ পাওয়াতেই টের পাওয়া গেছে সাদাটে গোরুটা এসেছে— গোলাম কিউব্রিয়ার ; কাছের । পুকুরে জল খাচ্ছে ; কেমন একটা ফোসফোস শব্দ হচ্ছে ; মাঠ-পুকুরে গায়ের গন্ধ শব্দ–সবই যেন একটি মানুষের মধ্যে দানা বেঁধে কাছে দাড়িয়ে আছে ; ভূতত্বের প্রাণবিজ্ঞানের লক্ষ-কোটি বছরের ইতিহাস সত্ত্বেও জানিয়ে দিচ্ছে ; মাটি মাঠ গোরু মানুষ একই জিনিস —একই সূৰ্যখণ্ডের থেকে জেগে উঠে একই বরফের দেশে লীন হয়ে আছে সব। ‘একই জিনিস অর্চিতা । “কিসের কথা বলছ ? 4. Ο