পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তোমাকেই ন-ভাই বলবে বড় দাদার '—মধুবিষ দৃষ্টিতে অৰ্চনা তাকাল নিশীথের দিকে । ‘কী হয়েছে রানুর । কী শুনেছ তুমি বলো । “আণমি শুনেছি—' "চলো করমচা বনেই যাই । ধস দেয়ালে ঠেস দিয়ে ঘাসের উপর বেশ আরাম করে বসা যাবে । কোথাও কেউ নেই—থমথম থিমথিম করছে তেপান্তর ? গাছের গুড়ির নিশীথকে বিধিছিল ; নারকেগলের গুড়ি, খোচা-খোচা এবড়ো-খেবড়ো, কোথাও এমন একটু জায়গা নেই যেখানে বসে স্বস্তি পাওয়L যায় একটু— 'না, যাব না'—খুব বীতকাম দৃঢ়তায় অর্চিতা বললে । ‘কেন যাবে না ? চলে যাই’—নিশীথ উঠে দণডাবার উপক্রম করল । ‘সে হয় না । তুমি যেতে পারে, আমি যাব না । সংকল্পের চেয়ে ওর গলায় কঠিনত টা—নিশীথের মনে হল—এমন অন্তিমে ঠেকেছে যে এবার আঁাট শোনপাপড়ির মতো চুর চুর করে ভেঙে পড়বে সব । গুড়িটার উপর একটু সুবিধে করে বসবার চেষ্টা করে নিয়ে নিশীথ বললে, ‘বলো দেখি, কণর কাছে কী শুনলে ?’ ‘স্টেশন দিয়ে যায় নি। রানুকে ওরা ফুসলেফসেলে গঙ্গাসাগরের মেলায় নিয়ে গেছল । অন্ধকার রাতে গা ঢাকা দিয়ে নৌকোয় বকচরের খাল দিয়ে । বলে পৗরবদরের কুদরতিতে পালিয়েছে। ‘ওরা ?—ওরণ করা ?? নিশীথ চারিদিকে তাকিয়ে অর্চিতার কাছ ঘেঁষে এসে বসল রোয়ণকের উপর । ‘সেই গঙ্গণসাগরের মেলার থেকে টেনে হিচড়ে নিয়ে গেল কলকাতায় । কলকাতায় তখন দাঙ্গা–বড় দাঙ্গণটা—আগস্ট মাসের । রণনু কাটা পড়ে নি । রাজাবাজার জানবাজার বেকবাগান চিৎপুর হয়ে এখন কোথায় আছে তা কেউ জানে না । কিন্তু আগছে ।” নিশীথ খানিকটা সরে বসে, হেসে, বললে, ‘এ-সব কে বললে তোমাকে ? ‘বিশ্বাস হচ্ছে না ? ‘নাম বললে না তো কারো ।” 이어