পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাকিয়ে দেখল জাম, তেঁতুল, সরবতি লেবুর ঝাড়ের ভিতর দিয়ে বেরিয়ে আসছে মহিম ; নিশীথকে দেখে নি, অর্চিতাকে দেখে নি । না ?] দেখবার আগে পাশাপাশি দুটো অৰ্জুন গাছের পিছনে সরে গেল অর্চিত। তারপর সময় হলে বেরিয়ে নিরণলা পথ দিয়ে সা করে চলে গেল কেমন যেন অপরূপ পিয়ণসিনীর মতন । নিশীথ ছাড়া কেউ দেখল না তাকে । নিশীথ নরেনদের বাড়ির দিকে যাবে কি না ভাবছিল । কলকাতা রওনা তবার অাগে রানুর সম্বন্ধে বিশেষ কোনো সন্দেহ মনের মধ্যে দানা বেঁধে না উঠলেই ভাল । এ সম্বন্ধে সে পরিষ্কার হয়ে নিতে চাচ্ছিল । বারবার নিজের মনকে বলেছে সে, তার স্ত্রীকে, আরো দু-চারজন লোককেও বলেছে যে, রণনুকে কোথাও পাওয়া যাবে না, এ-রকম উপলব্ধি দিয়ে মনটাকে শক্ত করে বেঁধে নেওয়া ভাল, কারণ, যা নেই তাকে কী করে পাওয়ণ যাবে। এ পৃথিবীর নিয়মই হচ্ছে এই যে, এখানে ক্ষুরধারে শ্ৰীছাদের মনের সব স্নিগ্ধ জিনিস হারিয়ে যায় ; হারিয়ে গেলে অণর আসে না, কোনো সুবলয়িত সৎ প্রশ্নেরই সদুত্তর পাওয়া যায় না মানুষের জীবনে । কেউ বলে উত্তর পাওয়া যাবে সেবায়েতদের কাছ থেকে । কিন্তু এরণ বা বিজ্ঞানীরা যে উদ্দেশ্যের ভিতর কাজ করে তার বাইরে অনেক দরকগরি নির্দেশের কোনো খোজ রাখে না তারা ; বলে জানি না ; অলৌকিকদের দিকে মুখ ফিরিয়ে রাখলে তারা বলে, আমরা নেই । নেই, এই কথাই ঠিক । নেই, কোনো উত্তর নেই। যা চাই তা নেই, যা শুভ্র ও শূন্য তাকে আহবান করে নিজের মনকে সুস্থ করে নেওয়া দরকার সুমনার-অর্চিতার ; কিন্তু নিশীথের মনের সুস্থতার দাবি আর-এক রকম। ভাবতে-ভাবতে হাসি পাচ্ছিল নিশীথের । গা ঝগড়া দিয়ে নরেনদের বাড়ির রাস্তা ধরে চলল নিশীথ । ‘কে আগছে বাড়িতে ? নরেন অগছে ? ‘নিশীথবাবু যে । আসুন । অণজ কলেজ ছুটি বুঝি ? নরেনের কাকা কালু মিত্তির নিশীথকে বাড়ির ছোট বৈঠকখানায় নিয়ে গেল । অণর-কেউ ছিল না সেখানে, 'কলেজ অfজ ছুটি ? ‘জানি না তো অামি । নিজে ছুটি নিয়েছি অগমি ।’ ‘ছারপোকার চেয়ারে বসেছেন । বেতের ইজিচেয়ারটায় বসুন । ওটাকে দু দিন ধরে ডিডিটি দিয়ে ঠিক করে নেওয়া-হয়েছে।’ b ఏ