পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানুষ বটে কিন্তু হুশিয়ার নন । ওর ছেলেমেয়ের ওকে নাকানি-চোবানি দিয়ে, একশেষ করল। কখন যে কোনদিকে দু’সি মারবে—ভাবতে-ভাবতে ওর ইউরিন তো অমৃত হয়ে উঠল । ইনসুলিনে কিছু হচ্ছে না—ঘুম হচ্ছে না— রোজ কড়া ওষুধ খেয়ে ঘুমোতে হয় ।” মুখের সিগারেটটা ফেলে দিল নিশীথ । কালুবাবুর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখল ভদ্রলোক একটু চিন্তিত । অর্চিত বলেছে, খুব সৎ, সত্যাশ্রয়ী মানুষ কালুবাবু, সে যাই হোক । এর ভাইপোরা অন্য রকম, প্রকাশবাবুও ।

  • নরেনকে তো পাওয়া যাবে না এ বেলা—’ ‘কেন, আপনার স্ত্রীর জন্যে তো ? তাকে রক্ত দিচ্ছে নরেন— কথাটা ভুলেই গেছল প্রায় নিশীথ, মনে পড়ে গেল। তবুও এমন একটা কী বিশুষ্কতায় মন ভরে গেছে তার—সে রক্তের বদলে নরেন যেন তার স্ত্রীকে রক্তশূন্যতা দিচ্ছে। কেবলই, এমনই একটা অদ্ভুত উপলব্ধিতে মুখটা কেমন যেন দেখাতে লাগল নিশীথের । কালুবাবু তাকিয়ে দেখল । ‘হ্যা, রক্ত দিচ্ছে বটে। কিন্তু আপনি কাউকে বলবেন না, দু-একটা কথা জানতে চাই অণপনার কাছে—’ ‘খুব গোপন কথা ? এদিকে একটু সরে বসুন । বলুন । 'নরেনের রক্তে কোনো দোষ নেই তো ?’ 'সে তো ডাক্তার পরীক্ষা করে দেখে নিয়েছেন । দোষ থাকলেও ওর রক্তে চলল তো । ডাক্তার কে ? সিভিল সার্জন ? মজুমদার ?

‘ই্য ।” তিনি দেখছেন, ঠিক আছে । না দেখেশুনে কিছু করবার মানুষ তিনি নন। তা তো ঠিক । কিন্তু নরেন এত আঘাট ঘাটিয়ে বেড়ায়—ডাক্তার যখন রক্ত পরীক্ষণ করে নিয়েছেন তখন আমাদের কিছু বলার নেই।’ ‘না না রক্তের কথা নয় । কথাটা হচ্ছে কি—নিশীথ একটা সিগারেট বার করে নিয়ে বললে, “আপনার ভাইপোরা কেমন তালেবর তা আপনার চেয়ে বেশি কে আর জানে। সবই তো জানেন আপনি । কিন্তু তবুও বলছি আপনাকে—নরেনদের সম্বন্ধে এমন অনেক কথা কীনে আণসে যা সত্যিই বিশ্বাস করতে ইচ্ছা হয় না । একটা কথা জিজ্ঞেস করছি, মেয়েদের ব্যাপার নিয়ে কোনো মোকদমণয় জড়িত হয়ে পড়ে নি ওদের কেউ কোনো দিন ?