এখন দেখিতে হইবে যে, জানবাজারের সেই হরেকৃষ্ণ ও গঙ্গাতীরের হরেকৃষ্ণ এক ব্যক্তি কি ভিন্ন ব্যক্তি। এই বিষয়টুকু যে পর্যন্ত ঠিক জানিতে পারা না যাইকে সেই পর্য্যন্ত এই মোকদ্দমার অনুসন্ধান শেষ হইবে না।
আমি পূর্ব্বেই বলিয়াছি যে, ব্রজবন্ধু সহরতলির একজন ব্যবসায়ী ও জমিদার। আরও বলিয়াছি যে, যে স্থানে তাহার বাসস্থান, তাহার নিকটবর্তী স্থানে আর একজন ব্যবসায়ী ও জমিদার বাস করিতেন। তিনি ব্রজবন্ধুর একজন বিষম শত্রু। সেই জমিদারের সহিত আমি একবার দেখা করিতে বাসনা করিলাম। তাঁহার সহিত আমার দেখা করিবার উদ্দেশ্য এই যে, এই কার্যে যদি ব্রজবন্ধু কোনরূপ জুয়াচুরি থাকে ও সেই জুয়াচুরির কথা যদি এই জমিদার শুনিয়া থাকেন, তাহা হইলে নিশ্চয়ই তিনি তাহা আমার নিকট ব্যক্ত করিবেন। আর যদি তিনি ইহার বিষয় কিছুমাত্র অবগত না থাকেন, তাহা হইলে চেষ্টা করিয়া সমস্ত কথা বাহির করিতে ক্রটী করিবেন না। কারণ এই সুযোগে তিনি তাহার চিরশত্রুর সর্বনাশ সাধন করিতে পারিবেন।
মনে মনে এইরূপ স্থির করিয়া, আমি সেই জমিদার মহাশয়ের পহিত সহিত সাক্ষাৎ করিলাম ও তাহাকে আমি সমস্ত কথা খুলিয়া বলিলাম। আমার কথা শুনিয়া তিনি কহিলেন, “আমি এ সম্বন্ধে এখনও পর্যন্ত কোন কথা শুনি নাই, কিন্তু ব্রজবন্ধুর অবস্থা দেখিয়া আমার মনে হইতেছে, আজকাল সে যেন কোন একটা গুরুতর বিষয় লইয়া ব্যস্ত আছে।”
আমি। আপনি উহার এমন কি অবস্থা দেখিয়াছেন যে, অনুমান করিতেছেন, উনি কোনরূপ গুরুতর কার্যে ব্যস্ত?