পাতা:জীবন বীমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
দারােগার দপ্তর, ১৬৩ সংখ্যা।

 জমিদার মহাশয়ের নিকট এই সকল কথা শ্রবণ করিয়া সরকারি খরচে ঐ সকল তীর্থ স্থান ভ্রমণ করিতে তাহার ইচ্ছা আছে কি না, তাহা জানিবার অভিপ্রায়ে আমি তাঁহাকে জিজ্ঞাসিলাম, যদি ঐ সকল স্থানে কৃষ্ণরামের অনুসন্ধান করিতে আমি গমন করি, আপনি সরকারি খরচে আমার সহিত ঐ সকল স্থানে গমন করিতে প্রস্তুত আছেন কি? তাহা হইলে এক কার্যে দুই কার্য্য অনায়াসেই শেষ হইবে।


 আমার কথার উত্তরে জমিদার মহাশয় কহিলেন, অন্য সময় হইলে আমি নিশ্চয়ই আপনার সহিত গমন করিতাম, কিন্তু এ সময় আমার এই স্থান পরিত্যাগ করিবার উপায় নাই। এই সময় আমি যদি এই স্থান হইতে অনুপস্থিত হই, জমিদারী ও ব্যবসা উভয় কার্য্যের আমার বিশেষরূপ ক্ষতি হইবে। আপনি নিজে গিয়া ঐ সকল স্থানে অনুসন্ধান করুন, আর আমি এই স্থানে থাকিয়া যতদূর সম্ভব উহাদিগের সংবাদ সংগ্রহ করিতে থাকি।

 জমিদার মহাশয়ের সহিত এই সম্বন্ধে কথা কহিয়া আমার মনে বিশ্বাস হইল যে, তিনি কোনরূপ কপটতা করিয়া আমাকে এই সংবাদ প্রদান করিতেছেন না। তিনি যাহা কিছু জানিতে পারিতেছেন, ব্রজবন্ধুকে জব্দ করিবার নিমিত্তই তাহাই আমাকে প্রদান করিতেছেন। কারণ তিনি বেশ অবগত আছেন যে, কৃষ্ণরাম ওরফে হরেকৃষ্ণকে ধরিতে না পারিলে, ব্রজবন্ধুকে বিশেষ রূপে বিপদাপন্ন করা যাইতে পারে না। এই ভাবিয়াই তিনি কৃষ্ণরামের অনুসন্ধানের নিমিত্ত প্রাণপণে এতদূর চেষ্টা করিতে ছেন। আমাদিগেরও এখন এই বিশ্বাস যে, তাঁহার চেষ্টাতেই আমরা আমাদিগের কার্য শেষ করিতে সমর্থ হইব।