পাতা:জীবন বীমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জীবন বীমা।
৫৩

কর্তব্য নহে। তোমার অবস্থা আমি বিশেষ অবগত আছি। কাল কি খাইবে তাহার সংস্থান তোমার নাই। এরূপ অবস্থায়, আমার বিবেচনায় তোমার এই সহস্র মুদ্রা পরিত্যাগ করা কোনরূপেই কর্ত্তব্য নহে। তদ্ব্যতীত আমি নিশ্চয়-বলিতে পারি যে, যদি তুমি আমাদিগকে সাহায্য কর, তাহা হইলে আমরাও তোমার নামে কোন মোকদ্দমা রুজু করিব না। তোমার জেল হবে না, অথচ এককালীন সহস্র মুদ্রা পাইলে তোমার কত উপকার হইবে।

 আমি উহাকে উপরোক্ত রূপ বুঝাইলে পর, সেই গুণধর জামাতা সহস্র মুদ্রার লোভ সংবরণ করিতে না পারিয়া, সমস্ত কথা আমার নিকট স্বীকার করিল, ও যে যে স্থানে উহারা গমন করিয়া, ছিল, তাহা সমস্তই আমাকে বলিল। আমি দেখিলাম, যে যে স্থানে আমি উহাদিগের সন্ধান পাইয়াছিলাম, উহারা প্রকৃতই সেই সেই স্থানে গমন করিয়াছিল। উহাদিগের যাতায়াতের সমস্ত খরচ ব্রজবন্ধু অর্পণ করিয়াছিলেন, কিন্তু সেই খরচ ফুরাইয়া যাওয়ায়, কৃষ্ণরামকে এক স্থানে রাখিয়া টাকার নিমিত্ত তিনি এই স্থানে আগমন করিয়াছেন। ব্রজবন্ধুর নিকট হইতে উপযুক্ত পরিমাণে অর্থ লইয়া, তাহারা আরও দূরদেশে গমন করিয়া, সেই স্থানে কিছু দিবস লুকাইতভাবে বাস করিবেন, এইরূপ স্থির করিয়াছেন।

 জামাতার নিকট এই সমস্ত বিষয় অবগত হইয়া, তাহাকে সঙ্গে লইয়া সেই রাত্রেই আমরা পুনরায় পশ্চিমাভিমুখে গমন করিলাম। গুণধর জামাতা আমাদিগের সহিত আর কোনরূপ কপটতা না করিয়া, অর্থলোভে আমাদিগকে যথাস্থানে লইয়া গিয়া, কৃষ্ণরামকে দেখাইয়া দিল। এটোয়া নামক স্থানের এক প্রান্তে একখানি ঘরভাড়া লইয়া, সেই স্থানে তিনি অপেক্ষা করিতেছিলেন।