পাতা:জেলের খাতা - বিপিনচন্দ্র পাল.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গোটা দুই তিন কঠিন কথা

খৃষ্টীয় সাকারবাদ

 বৈষ্ণবেরা ইহাতে লজ্জিত নহেন, জানি। কিন্তু খৃষ্টীয়ানেরা এ কথাতে নিরতিশয় ব্যথিত হইবেন। তাঁহাদিগকে ব্যথিত করা আমার ইচ্ছা নহে। সাকারবাদ ঘলিতে, এখানে আমি কাষ্ঠ-লোষ্ট্রের উপাসনা বা প্রচলিত প্রতিমাপূজা নির্দ্দেশ করিতেছি না। খৃষ্টীয়ানেরা যে ঈশ্বরকে জড়-আকার সম্পন্ন মনে করেন, এমন কথা আমি বলি না। আর খৃষ্টীয়ান বধূগণ যদি বৈঞ্চবতত্ত্বের আলোচনা ভাল করিয়া, সংস্কার-বর্জ্জিত হইয়া, করেন তবে এও দেখিবেন যে বৈষ্ণবেরাও ঈশ্বরে কোন প্রকারের জড় স্বভাব আরোপিত বা কল্পিত করেন না। বৈষ্ণব ঈশ্বরতত্ত্ব সাকার বটে, কিন্তু চিদাকার। খৃষ্টীয় ঈশ্বরতত্ত্বও কি তাহাই নহে?

বাইবেল কি বলে।

 বাইবেলের ঈশ্বরতত্ত্ব মোটামুটি দুইভাগে বিভক্ত হয়। এক পুরাতন ইহুদাধর্মের ঈশ্বরতত্ব, আর এক যিশুখৃষ্ট ও তাঁহার প্রথম শিষ্যদিগের বা নিউ টেষ্টেমেণ্টের ঈশ্বরতত্ত্ব। ইহুদার ঈশ্বরতত্ত্ব যে একান্ত নিরাকার নহে, পণ্ডিতেরা এখন প্রায়। একবাক্যে এ কথা স্বীকার করেন। পুরাতন পুস্তকে বা ওল্ড্‌ টেষ্টেমেণ্টে ঈশ্বরের কোনো আকার নির্দ্দেশ করে না, সত্য; কিন্তু নানাভাবে নানাদিক্‌ দিয়া, তাঁহাতে মানবধর্ম্ম আরোপিত করে, এ কথা অস্বীকার করা অসম্ভব। সুতরাং ইহুদার ঈশ্বরতত্ত্ব নিতান্ত নিরাকার এমন সিদ্ধান্ত হয় না। খৃষ্টীয় ঈশ্বরতত্ত্ব তদপেক্ষা সূক্ষ্মতর সন্দেহ নাই,~কিন্তু ইহাও একান্ত নিরাকার নহে।

খৃষ্টীয় ঐশ্বর্য্যবৃদ্ধি

 খৃষ্ট-পন্থা ভক্তি-পন্থা; সুতরাং এখানে ভগবদৈশ্বর্য্যের অনুশীলন স্বাভাবিক; ইহুদার ধর্ম্মশাস্ত্রে ভগবদৈশ্বর্য্যের বিস্তর বর্ণনা আছে,—