পাতা:জেলের খাতা - বিপিনচন্দ্র পাল.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গোটা দুই তিন কঠিন কথা
১৫

যোগ স্থাপন ও রক্ষা করিবার জন্য নবী বা প্রফেট্‌, পয়গম্বর ও অবতারাদির প্রয়োজন হয়। ইহুদীর ঈশ্বর প্রথমে ইহুদী-সমাজের নেতৃবর্গের সঙ্গে সাক্ষাৎ ভাবেই কথাবার্ত্তা কহিতেন। এমন কি কখনো বা তাঁহাদের সঙ্গে হাতাহাতি কুস্তি কসরৎ করিতে আসিতেন। সে অবস্থায়, কাজেই পয়গম্বর বা অবতারের আবশ্যক হয় নাই। ইহুদার ঈশ্বর যখন লোকচক্ষুর একান্ত অতীত হইয়া গেলেন, তখন হইতে ইহুদাসমাজে। নবী বা প্রফেটদিগের আবির্ভাব আরম্ভ হইল। ঈশ্বরের “বাণী” আসিয়া ইহাদিগকে অবলম্বন করিয়া। ইহুদা-সমাজে তাঁহার আদেশ প্রচার করিতে লাগিল। তখন হইতে এই সকল নবী বা প্রফেট বা প্রবক্তাই ইহুদাধর্ম্মের লৌকিক অবলম্বন হইলেন। কিন্তু এই নবীদিগের সময় হইতেই, কালক্রমে ইহুদার উদ্ধার-সাধনের জন্য জিহোবার নিকট হইতে একজন মিসায়া বা মসী বা বিশেষ দূত, আবির্ভুত হইবেন, এ ভাব ইহুদা-সমাজে অল্পে অল্পে জাগিতে আরম্ভ করে। তাঁহার আদি ইহুদী শিষ্যগণ যিশুকে এই মসী বা মিসায়াবপেই গ্রহণ করেন। তাঁহাদের নিকটে যিশু “ঈশ্বরের সন্তান” রূপেই প্রকাশিত হন। বাইবেলের পুরাতন পুস্তকে দেবদূতদিগকে বারম্বারই ঈশ্বরপুত্র আখ্যা দিয়াছে। ইহুদী ভাষায় ইহাদিগকে—“বেনে ইলোহিম্‌”-বলিত। যিশু স্বয়ং এই উপাধি গ্রহণ করেন—আপনাকে ঈশ্বরপুত্র বা সন্‌ অব্‌ গড্‌, Son of God বলিয়া প্রচার করেন। তাঁহার ইহুদী শিয্যেরা ঈশ্বরপুত্র বলিতে প্রবক্তাগণকে কথিত মসী বা মিসায়া বলিয়াই বুঝিায়াছিলেন। খৃষ্টধর্ম্ম এই ঈশ্বরপুত্রের যে ব্যাখ্যা করিয়াছেন, তাহা যিশুর ইহুরা শিষ্যগণের ব্যাখ্যা বলিয়া মনে হয় ন।;—প্রকাশ্যভাবে যিশুর ঈশ্বরত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টাই দৃষ্ট হয়।

 In the beginning was the Word and the Word was ith God, and the Word was God.