পাতা:জেলের খাতা - বিপিনচন্দ্র পাল.pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৪২
দ্বিতীয় চিন্তা

বুদ্ধিকে উন্মুক্ত করিতেছে, তাহাই তোমার বুদ্ধিকেও প্রকাশ করিতেছে। বলিয়া তোমাকে আমি জানি, আমাকে তুমি জান। একই প্রেম, একই স্নেহএকই দয়াএই দাক্ষিণ্যসমুদায় বিশ্বকে আচ্ছন্ন করিয়া। আছে বলিয়া, অামার ও তোমার ও এই বিশাল জনসমাজের মেহপ্রেম দয়াদাক্ষিণ্যের সম্বন্ধস কল প্রতিষ্ঠিত ও প্রকাশিত হইতেছে। সেই মহান একে, সেই পরমতত্ত্বে, সেই নিথিলরসামৃতমূর্ত্তি ভগবানে, সংসারের বিচিত্র সম্বন্ধসকল প্রতিষ্ঠিত। তাহা হইতে যখন এগুলিকে পৃথক। করিয়া দেখি, তখনই এসকল মায়িক হইয়া দাড়ায়, এস কলের কোনো সত্য ও সারবত্তা আর থাকে না। তথন সত্যি সত্যি, —

  তুমি কার, কে তোমার, কারে বলরে আপন,
  মিছে মায়া নিদ্রাবশে, দেখিছ স্বপন

 ইহাই সত্য হইয়া দাড়ায়। কিন্তু আমাকে ও আমার ধার। ওঁদের সকলকে যখন ভগবানের মধ্যে দেথি,=

  এক ভানু অযুত কিরণে,
  উজলে যেমতি সকল ভুবনে,

(তেমতি) তার প্রতি হইয়ে শতধা- বিরচয়ে সতীর প্রেম, জননী-হৃদয়ে করে বসতি— এই যখন প্রত্যয় করি, তখন এই মায়া বরণ সরিয়া গিয়াসংসারের সকল সম্বন্ধ, সকল সুথ, সকল দুঃখ, সকল ভেদাভেদ, সকল ধর্ম্মাধর্ম্ম, সকল কর্ত্তব্যাকর্ত্তব্যকে সত্য করিয়া তোলে॥ তথন আর “তুমি কার। কে তোমার, কারে বলরে অপন,”—এই বলিয়এই স্নেহ-প্রেম দয়া দাক্ষিণ্যের, এই ধর্মকর্মের-গুরুতর দায়িত্ব ও কঠিন ঋণজাল এড়াইতে পারি না। তখন দেখি“আমি সবাকার,। সবাই আমার,। বিশ্ব আমার অপন।