পাতা:জোড়া পাপী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জোড়া পাপী।
১৯

কিন্তু যখন বৃষ্টির প্রকোপ বর্ধিত হইল, তখন সে অশ্বরজু সংযত করিয়া এক প্রকাণ্ড আম্রবৃক্ষের তলায় আশ্রয় গ্রহণ করিল। সৗভাগ্যক্রমে গাড়ীতে যে দুইটা লণ্ঠন ছিল, তাহারা তখনও নীর্ব্বাপিত হয় নাই। একটা গভীর বাহিরেই রহিল, অপরটী গাড়ীর ভিতরে লইলাম। চারিদিকে ভয়ানক অন্ধকার, আর সেই মুষলধারে বর্ষণের মধ্যে আমরা তিনটা মানব এক নিবিড় অস্ত্রবৃক্ষের তলায় আশ্রয় লইয়া কত কি ভাবিতে লাগিলাম।

চতুর্থ পরিচ্ছেদ।


 সুখের পর দুঃখ আর দুঃখের পর সুখ এ জগতের ইহাই এক চিরন্তন প্রথা। নিরবচ্ছিন্ন সুখ যেমন কাহারও অদৃষ্টে ঘটে না, নিরবচ্ছিন্ন দুঃখও তেমনই কাহ'কেও ভোগ করতে হয় না! পর্যায়ক্রমে সুখ দুঃখ না আসিলে লোকে সুখের প্রয়াসী হয় না এবং দুঃখ তত কষ্টকর বলিয়া বোধ হয় না। দুঃখ আছে বলিয়াই সুখের এত আদর-সুখের জন্য লোকে এত লালায়িত।

 কিছুক্ষণ ভয়ানক অশান্তির পর প্রকৃতি ক্রমেই শান্তমূর্তি ধারণ করিল। যে আকাশ এতক্ষণ দুর্ভেদ্য নিবিড় জলদজালে আবৃত ছিল, দেখিতে দেখিতে তাহা পরিষ্কার হইল। সেই ঘোর কৃষ্ণবর্ণ মেঘমালা কোথায় অদৃশ্য হইল। আকাশে অগণন তারকারাজি শোভা পাইতে লাগিল। যে পবন এতক্ষণ সংহার-মূর্ত্তি ধারণ করিয়া দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়। সন্ সন্ শব্দে প্রকাণ্ড মহীরুহ