পাতা:জোড়া পাপী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
দারোগার দপ্তর, ২০৪ সংখ্যা।

ধ্বংস করিতেছিল, প্রকৃতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সেও শান্ত হইল—প্রবল প্রভঞ্জন মুক্তি কাগ করিয়া মলয়মারুত মূর্ত্তি পরিগ্রহ করিল। কোচমান পুনরায় শফট চালনা করিল।

 জিজ্ঞাসা করিয়া জানিলাম, সেখান হইতে হাটখোলা বাইতে হইলে আরও এক কোয়ার্টার সময় লাগিবে। পল্লীগ্রামের পথ, সেই মাত্র মুষলধারে বৃষ্টি হইয়া গিয়াছে, পথে আলোকের অভাব ইত্যাদি নানা কারণে আরও অধিক সময় লাগিবার সম্ভাবনা দেখিয়া, আমার সঙ্গী সেই যুবক অতি বিনীতভাবে জিজ্ঞাসা করিলেন, “মহাশয়, আজ রাত্রিও অনেক হইল, তাহার উপর এই দুর্যোগ, কেন এত কষ্ট স্বীকার করিবেন? যখন আজ আপনাকে এখানেই থাকিতে হইল, তখন কাল প্রতেই সেখানে গিয়া সেই বাবুর সহিত দেখা করবেন।”

 যুবকের কথাই যুক্তিসঙ্গত বলিয়া বোধ হইল। এতক্ষণ সেই ঝড় বৃষ্টি সহ করিয়া মনে মনে বড়ই বিরক্ত হইয়াছিলাম। ভাবিতে ছিলাম, কি কুক্ষণেই সেদিন কলিকাতা ত্যাগ করিয়াছি। কিন্তু স্বয়ং সে কথা ব্যক্ত করিতে লজ্জা বোধ কষিতেছিলাম। এখন যুবকের কথা শুনিয়া আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, এখান হইতে আপনার বাড়ী কতদুর?”

 যু। প্রায় অর্ধ ক্রোশ; কিন্তু যখন এতদূর আসিয়াছি তখন আর আপনাকে আমাদের বাড়ীতে যাইতে হইবে না। নিকটেই আমার এক বন্ধুর বাড়ী আছে। তিনি বেশ সঙ্গিতসম্পন্ন অপচ দেববিজে তাঁহার বেশ ভক্তিও আছে। যদি আপনার অমত না হয়, তাহা হইলে আজ রাত্রে সেইখানেই বাস করা যাউক।

 আ। এখান হইতে কতদূর?