পাতা:জোড়া পাপী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
দারোগার দপ্তর, ২০৪ সংখ্যা।

 যে লোক প্রশ্ন করিয়াছিল, যুবক যাহাকে রামসদয় বলিয়া সম্বোধন করিলেন, যুবকের কথায় অত্যন্ত লজ্জিত হইল। অতি বিনীতভাবে বলিল, “কেও, পীতারবাবু! এই দুর্যোগে আপনি এখানে? আপনাকে চিনিতে পারি নাই—ক্ষমা করিবেন।”

 যুবক সে কথায় কর্ণপাত না করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমার বাবু কোথায়?”

 রা। তিনি উপরেই আছেন। এতক্ষণ নীচে ছিলেন, ভয়ানক ঝড়বৃষ্টি, উপরে গিয়াছেন।

 যু। একবার ডাকিয়া দাও আর নীচেকার বৈটকখানার দরজা খুলিয়া দাও।

 রা। আপনিত উপরে যান, আজ কেন ও কথা বলিতেছেন?

 যু। আমি একা হইলে তোমায় কষ্ট দিতাম না। আমার সঙ্গে একজন বাবু আছেন দেখিতেছ না।

 রামসদয় তখনই যুবকের আদেশ পালন করিল।

 কিছুক্ষণ পরেই একজন সন্ত্রস্ত যুবক স্বহস্তে একটা প্রজ্জ্বলিত হ্যারিকেনল্যাম্প লইয়া আমাদের নিকট আগমন করিলেন, এবং আমার সঙ্গীকে দেখিয়া শশব্যস্ত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি হে পীতাম্বর। এই দুর্য্যোগে এখানে কেন?”

 যুবক সকল কথাই ব্যক্ত করিলেন। পরে বলিলেন, “বাবুকে আজ রাত্রের মত তোমার বাড়ীতে আশ্রয় দিতে হইবে। আমাদের বাড়ীতেই ইহাকে লইয়া যাইতেছিলাম কিন্তু সেও ত এখান হইতে অনেক দূর। এই দুর্যোগে রাত্রিকালে পল্লীগ্রামের পথ দিয়া এতটা পথ যাওয়া বড় সই কথা নহে। সেই জন্যই অগত্যা তোমার আশ্রয়ে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছি।”