পঞ্চম পরিচ্ছেদ।
কতক্ষণ যে সেই অবস্থায় পড়িয়াছিলাম, বলিতে পারি না, কিন্তু যখন আমার জ্ঞান সঞ্চার হইল, তখন বুঝিতে পারলাম, আমার সর্বাঙ্গে ভয়ানক বেদনা হইয়াছে, মুখ ও ললাটে হাত দিয়া দেখিলাম, তখনও সেই সকল স্থান হইতে রক্ত ঝরতেছে।
কিছুক্ষণ সেই ভাবে পড়িয়া থাকিয়া ভাবিলাম, কেন এমন হইল? পীতাম্বর কে? কেনই বা সে ষ্টেশন হইতে আমার সঙ্গে সঙ্গে ঘুরিতেছে। পূর্বে তাহার কথাবর্তা শুনিয়া অত্যন্ত পরোপকারী বলিয়া মনে করিয়াছিলাম; কিন্তু এখন তাহাকে একজন ভয়ানক বিশ্বাসঘাতক দস্যু বলিয়া বোধ হইল। সারদাচরণই বা কে? উভয়ের মধ্যে নিশ্চয়ই কোন প্রকার ষড়যন্ত্র ছিল। নতুবা দুইটীর শয্যার মধ্যে পীতাম্বর যে শয্যায় শয়ন করিল, সেটীর ত কোনরূপ গোলযোগ ছিল না, সে ত অনায়াসে আমার সাক্ষাতে শয্যায় গিয়া শয়ন করিল। আর আমিই বা পড়িলাম কেন? শয্যাটী এরূপ ভাবে রচিত হইয়াছিল যে, শয়ন করিব। মাত্র একেবারে অন্ধকূপে পতিত হইব। কি ভয়ানক কৌশল! কি অদ্ভুত রহস্য!! কি ভয়ঙ্কর বিশ্বাসঘাতকতা!!!
একটী একটী করিয়া অনেকগুলি দিয়াশলাই পোড়াইলাম, কিন্তু সে স্থান হইতে বহির্গত হইবার কোন উপায় দেখিতে পাইলাম না। ভাবিলাম, এইরূপেই কি আমার জীবন শেষ হইবে? যেমন করিয়া পারি, সেখান হইতে উদ্ধার হইব, মনে মনে এই দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করিলাম।