সাহস করিলাম না। কোনরূপে সেই বাগান হইতে বহির্গত হইয়া এক সরকারী পথে উপস্থিত হইলাম, এবং সেই পথ দিয়া ক্রমাগত পূর্বমুখে যাইতে লাগিলাম।
প্রায় অর্দ্ধঘণ্টা কাল এই প্রকারে গমন করিবার পর, আমি গঙ্গাতীরে উপস্থিত হইলাম। নিকটেই মনের জন্য একটী ঘাট, আমি সেই ঘাটের এক নিভৃত স্থানে গিয়া উপবেশন করিলাম এবং কত কি চিন্তা করিতে লাগিলাম।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ
কোন কার্য্য দেখিয়া তাহার ফল অনুমান করা যায় না। এই যে কিছুক্ষণ পূর্বে ভয়ানক ঝড় ও বৃষ্টিতে না জানি কতই কষ্ট ভোগ করিলাম এবং মনে মনে ঈশ্বরকে শত শত গালি দিলাম, তাহার ভিতর মঙ্গলময় যে আমার উদ্ধারের উপায় করিয়া রাখিয়াছিলেন, তাহা কি তখন জানিতে পারিয়াছিলাম? তখন কি জানিতাম যে, সেই ঝড়ে নারিকেলবৃক্ষটা পড়িয়া যাইবে এবং সেই পতনে ঐ অন্ধকূপের সুড়ঙ্গদ্বার ভাঙ্গিয়া যাইবে? কখনও না। তাই বলিতেছি, মঙ্গলময়ের কার্য্য সমস্তই মানবের মঙ্গলের জন্য। আমরা সামান্য প্রাণী, তাঁহার কার্যের কি বুঝিব?
দেখিতে দেখিতে রাত্রি প্রভাত হইল। উষার আলোক প্রকটিত হইব। মাত্র আমি মুখাদি প্রক্ষালন করিলাম। যে যে স্থানে ক্ষতবিক্ষত হইয়া গিয়াছিল, গঙ্গার জলে সেই সকল স্থান উত্তমরূপে ধৌত করিলাম এবং কাপড় ভাল করিয়া পরিধান করিয়া বসিয়া রহিলাম।