পাতা:জোড়া পাপী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
দারোগার দপ্তর, ২০৪ সংখ্যা।

 কিছুক্ষণ পরেই এক বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ একখানি নামাবলী গায়ে দিয়া হরিনাম করিতে করিতে ঘাটে আগমন করিলেন। বৃদ্ধ হইলেও ব্রাহ্মণের বেশ ক্ষমতা ছিল। তাহার শরীর বেশ দৃঢ় ও সবল বলিয়া বোধ হইল। ঘাটে আসিয়া ব্রাহ্মণ আমার দিকে দৃষ্টিপাত করিলেন এবং আমাকে অপরিচিত দেখিয়া আশ্চর্যান্বিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “মহাশয়ের বাড়ী কোথায়? এত প্রত্যুষে স্নান করিতে আসিয়াছেন?”

 ব্রাহ্মণের মিষ্ট কথায় আমি তাহার নিকটে যাইলাম। পরে অতি বিনীতভাবে উত্তর করিলাম, “আমি স্নান করিতে আসি নাই, আর আমার বাড়ীও চন্দননগরে নহে। নরেন্দ্রনাথ মুখো নামে একজন লোকের সহিত সাক্ষাৎ করিবার মানসে আমি কলিকাতা হইতে এতদূরে আসিয়া পড়িয়াছি। কিন্তু যৎপরোনাস্তি চেষ্টা করিয়া তাঁহার কোন সন্ধান পাইতেছি না।”

 আমার কথায় ব্রাহ্মণ আরও বিস্মিত হইলেন। তিনি জিজ্ঞাসা কহিলেন, “কে নরেন—হাটখোলার নরেনবাবু?”

 শশব্যস্ত হইয়া আমি বৃদ্ধের কথায় সায় দিলাম। বলিলাম, “আপনি যথার্থ ই হনুমান করিয়াছেন। যদি তিনি আপনার পরিচিত হন, তাহা হইলে দয়া করিয়া আমাকে তার বাড়ী দেখাইয়া দিলে উপকৃত হইব।”

 ব্রাহ্মণ হাসিয়া বলিলেন, “সে কি কথা! আমার স্নান শেষ হইলে যখন বাড়ী যাইব, তখন আপনিও আমার সঙ্গে যাইবেন। নরেনবাবুর বাড়ী আমাদেরই বাড়ীর নিকট। আশ্চর্য্য এই যে, আপনি এত চেষ্টা করিয়া তাহার ন্যায় সজ্জনের সন্ধান পাইলেন না।”